(দিনাজপুর২৪.কম) উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে সপ্তাহজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যতই দিন যাচ্ছে, ততই শীতের তীব্রতা প্রকট হচ্ছে। পৌষের শীতে হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থায় দুর্ভোগে দিন কাটছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
শীতপ্রবণ এই জেলায় গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ৮ থেকে ৯ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠানামা করছে।
শুক্রবার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি। এরপর সকাল ৯টায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে নামে বলে জানায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমে গিয়ে ২৪ থেকে ২৫ ডিগ্রির ঘরে দাঁড়িয়েছে। এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি।
সরেজমিনে পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারদিক। কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়।
শীতে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগও দিন দিন বাড়ছে। এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা কষ্টে আছেন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে গত বছরে শীতকালের পৌষের এই সময়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গিয়েছিল পঞ্চগড়। কিন্তু এবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান জানান, হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। পচা-বাসী খাবার পরিহার ও গরম কাপড় ও মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
দিনের বেলা কুয়াশা না পড়ায় এই শীতে কৃষিতে এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শামীম।
পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তৌহিদুল বারি বাবু জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ঋতু পরিক্রমাতেও পরিবর্তন এসেছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে জেলায় এ পর্যন্ত ২২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ জন্য আট লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে শীতবস্ত্র কিনে বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।
এছাড়া বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। কাজেই শীতবস্ত্রের কোনো অভাব থাকবে না। পঞ্চগড়ের শীতার্তদের জন্য সমাজের বিত্তবান ও বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে এই জেলায়। -অনলাইন ডেস্ক