(দিনাজপুর২৪.কম) রাজধানীর মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে প্রায় দুই হাজার গরিব গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে দরিদ্র মঙ্গল সমবায় সমিতি নামের একটি বেসরকারি সমিতি। ওই এলাকার সবজি বিক্রেতা, গৃহকর্মী, রিকশাচালক, দারোয়ান ও ভিক্ষুকসহ দরিদ্র গ্রাহকের কাছ থেকে এ টাকা সংগ্রহ করেছে সমিতিটি। টাকা ফেরতের দাবিতে শনিবার দুপুরে ঢাকা উদ্যান মূল সড়কে কয়েকশ গ্রাহক বিক্ষোভ করেন।
সবজি বিক্রেতা হাওয়া বেগম বলেন, আমার কাছে সমিতির কয়েকজন লোক গিয়ে বললেন, গরিবদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটা সমিতি করা হয়েছে। ৭ হাজার টাকা জমা দিলে আমাদের ১ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। আমরা আস্তে আস্তে টাকাগুলো পরিশোধ করতে পারব। আমি পরিবারের ৯ জনের নামে দেড় লাখ টাকা দিয়ে ৯টা বই করি। আজ আমাদের প্রতি নাম বাবদ দেড় লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। এখন পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
রফিকুল ও হাওয়া বেগমের মতো রহিমা বানু, আব্দুল জব্বার, মিজান, শরীফুলসহ পুরো মোহাম্মদপুর এলাকার এসব দরিদ্র গ্রাহককে প্রতারণা করেছে দরিদ্র মঙ্গল সমবায় সমিতি। এদিন সমিতির কার্যালয়ে বিক্ষোভকালে তারা মাঠকর্মী নাসরীন, সোহাগ ও মিজানকে আটক করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যায়।
সমিতিটির মাঠকর্মী মিজান বলেন, আমার মতো আরও ১০-১২ জন মাঠকর্মী রয়েছেন। গত রাত থেকে সমিতির ম্যানেজার শাখওয়াত হোসেনকে ফোন দিয়ে পাচ্ছি না। তিনি ফোন নম্বর বন্ধ রেখেছেন। অডিট ম্যানেজার কাওসারের নম্বরটিও বন্ধ। অন্যদিনের মতো আজ অফিস করতে এলে গ্রাহকরা আমাদের আটক করেন। আমরাও প্রতারণার শিকার। অনলাইন প্ল্যাটফরম বিক্রয় ডটকমের মাধ্যমে আমরা চাকরির আবেদন করেছিলাম। তার মতো নাসরীন ও শরিফুল একই কথা জানান।
বাড়ির মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসলেম মিয়ার সঙ্গে ২০ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিই। তারা গত বছর ডিসেম্বরে বাসায় ওঠেন। এক মাস ভাড়া দিলেও গত দুই মাস দেব-দিচ্ছি করে এখনো দেননি। এ মাসের শুরুতে চাপ দিলে তারা আজ অগ্রীম বাবদ ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছেন।
কিন্তু এভাবে তালা মেরে পালিয়ে যাবেন জানা ছিল না। পুলিশ আমার কাছ থেকে বাসাভাড়ার চুক্তিপত্র নিয়ে গেছে। এ সময় মুসলেম মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে। -নিউজ ডেস্ক