(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) অপহৃত সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন রাসেলকে বান্দরবানের রুমা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও নিরাপত্তাবাহিনী বিশেষ অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে।
নেজামকে এরইমধ্যে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুক্রবার সকালে বান্দরবান জেলা সদরের মেঘলায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ হলরুমে প্রেসব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব এবং অপহৃত ম্যানেজার নেজামের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা নেজামের চোখ বেঁধে কোনো এক পাহাড়ের ঝিরিপথে হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তার চোখের বাঁধন খুলে দেয় এবং অন্ধকারে চলার জন্য তার হাতে একটি বাটন মোবাইল সেট ধরিয়ে দেয়। এভাবে প্রথম রাত কেটে যায়।
অপহরণের দ্বিতীয় দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ম্যানেজারকে নাস্তা খেতে দেয়া হয় এবং পায়ে হাঁটিয়ে পাহাড়ি ঝিরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপেক্ষমান ৩০-৩৫ জনের একটি দল ম্যানেজারকে কলা পাতায় করে গরম ভাত, ডাল ও ডিম ভাজি দিয়ে খেতে দেয়। সেখান থেকে হাঁটিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। নতুন অবস্থানে ম্যানেজারকে ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭ পর্যন্ত সেখানেই তাকে রাখা হয়। রাতে ম্যানেজারকে ডাল ও ডিম ভাজি দিয়ে সদ্য রান্না করা ভাত খেতে দেয়। অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন সূত্রে জানা গেছে, অপহরণকারীরা নিজেদের মধ্যে বম ভাষায় কথা বললেও ম্যানেজারের সাথে কথা বলার সময় তারা শুদ্ধ বাংলা ভাষা ব্যবহার করতো।
সূত্র জানায়, ২-৩ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নেজামকে সবসময় ঘিরে রাখতো। এছাড়া ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপ তার আশেপাশে অবস্থান করতো। দ্বিতীয় দিন বুধবার রাত ৮ টার দিকে একটি মাচাং ঘরে (টং ঘর) কড়া সশস্ত্র প্রহরায় ম্যানেজারের রাতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়। জিম্মি অবস্থায় সন্ত্রাসীরা ম্যানেজারকে মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীর সাথে কথা বলার সুযোগ করে দেয়।
পরিবারের সাথে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের ফোন কলের সূত্র ধরে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে র্যাব তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। এরপর শুরু হয় সন্ত্রাসীদের সাথে র্যাবের যোগাযোগ।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাংক ম্যানেজারের স্ত্রী মাইসুরা ইসফাত এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রুমা উপজেলায় অবস্থান করছিলেন। ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের পর ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে তাদেরকেও র্যাবের একটি গাড়িতে চড়িয়ে রাত সোয়া ৯টার দিকে আসা হয় বান্দরবান জেলা সদরের মেঘলা এলাকায় অবস্থিত র্যাব ১৫ কার্যালয়ে। -নিউজ ডেস্ক