(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ২ জুন সকালে শুরু হচ্ছে নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। ৮ জুন সকালে ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে নামছে বাংলাদেশ। এদিকে বিশ্বকাপ মিশনের আগে আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথমবার কোনও সিরিজ খেলতে নেমেছে টাইগাররা। এমন ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ফের টপ অর্ডারদের ব্যর্থতায় ধুকতে থাকে বাংলদেশ।
এক তাওহীদ হৃদয় ছাড়া ভালো করতে পারেননি আর কোনো টপ অর্ডার ব্যাটার। শেষ হৃদয়ের পর্যন্ত অর্ধশতকে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ বলে হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় পায় যুক্তরাষ্ট্রে।
আর প্রথমবারের মতো দুই দল কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার পর লজ্জায় পুড়লেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। তাতে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ওপেনিংয়ে আসেন স্টিভেন টেইলর ও মোনাক প্যাটেল। শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর আগ্রাসী শুরু করেন এই দুই ব্যাটার। মারকুটে ব্যাটিংয়ে ২৭ রানের জুটি গড়েন টেইলর ও মোনাক।
তবে দলীয় ২৭ রানে মোনাক রান আউটে কাটা পড়লে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে যাবার আগে ১০ বলে ১২ রান করেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন অ্যান্ড্রিস গিউস। তাকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন টেইলর।
বাইশ গজে ব্যাট হাতে বাংলাদেশ বোলারদের ওপর চড়া হতে থাকেন গিউস। তবে দলীয় ৬৫ রানে আউট হলে ভাঙে ৩৮ রানের এই জুটি। সাজঘরে যাবার আগে ১৮ বলে ২৩ রান করেন তিনি। এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন অ্যারন জোন্স। তাকে সঙ্গে নিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন ওপেনার স্টিভেন টেলর।
তবে দলীয় ৭৫ রানে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা স্টিভেনকে ফেরান মুস্তাফিজ। একই ওভারে তাকে সঙ্গী দেওয়া জোন্সকেও। ২৯ বলে ২৮ রান করেন টেলর। তিনি ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহকে। ১২ বলে ৪ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন জোন্স।
ফিজের জোড়া আঘাতে চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। পঞ্চম উইকেটে নীতিশ কুমার ও কোরি অ্যান্ডরসন চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন। তবে উইকেটে থিতু হয়ে বেশিক্ষন টিকতে পারেননি কুমার দলীয় ৯৫ শরিফুলের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ১০ বলে ১০ করেন কুমার।
এরপর অ্যান্ডরসন ও হারমীত সিংয়ের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৩ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত অ্যান্ডরসন ২৫ বলে ৩৫ ও হারমীত ১৩ বলে ৩৩ব রানে অপারিজত থাকেন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। শুরু থেকে দেখেশুনে খেলতে থাকে টাইগার এই দুই ওপেনার। থিতু হয়ে যেয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জীবন পায় লিটন। আলী খানের করা বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ মোনাঙ্ক প্যাটেলের হাত ফসকে গেলে বেঁচে যান তিনি। ২ রানে জীবন পেয়ে পরের ওভারে ছক্কা হাঁকান লিটন।
এরপর ভালো শুরুর আভাস দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। তবে দলীয় ৩৪ রানে যেয়ে খেই হারায় সৌম্য-লিটন। এখানেও ব্যর্থ লিটন। ১৫ বলে ১৪ রান করে আউট হন তিনি। লিটনের বিদায়ের পর পরই
১৩ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য।
জোড়া উইকেট হারিয়ে থুকতে থাকা টাইগারদের সামাল দিতে ব্যাটিংয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। এদিনও ব্যার্থ শান্ত। উইকেটে থিতু হয়ে দলীয় ৫১ রানে সাজঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক। সাজঘরে যাবার আগে ১১ বলে ৩ রান করেন তিনি।
এরপর ব্যাট হাতে আসেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেবার চেষ্টা করেন হৃদয়। তবে দলীয় ৬৮ রানে ভুল তাওহীদের ভুল কলে রান আউটে কাটা পড়েন সাকিব। সাজঘরে যাবার আগে ১২ বলে ৬ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন হৃদয়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রিয়াদ।
এই দুই ব্যাটার ৬৮ রানের জুটি গড়েন পঞ্চম জুটিতে। তবে দলীয় ১৩৫ রানে ২২ বলে ৩১ রানে করে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। এরপর ইনিংসের শেষ বলে ৫৮ রানে আউট হন হৃদয়। তাতে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানের লড়াকি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে বল হাতে স্টিভেন টেইলর নেন সর্বোচ্চ দুই উইকেট। -নিউজ ডেস্ক