(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) ‘প্রশ্নফাঁস’— শব্দটির সঙ্গে দেশের মানুষের পরিচয় দীর্ঘদিনের। তবে সচরাচর স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁস হলেও; এবার খোঁজ মিলেছে সরাসরি পিএসসির প্রশ্নফাঁস চক্রের। যারা দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ফাঁস করেছেন বিসিএসসহ সরকারি-বেসরকারি চাকরির প্রশ্ন। এর মাধ্যমে কামিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এই চক্রের কর্মকাণ্ড। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাদের মধ্যে ৬ জন নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে— বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নফাঁস চক্রের আরও ১৪ জনকে খোঁজা হচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড রয়েছেন। যারা কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতেন। বনে গেছেন কোটিপতি। ব্যাংকের মাধ্যমেও তাদের অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রে রয়েছেন শতাধিক সদস্য।
সিআইডির ভাষ্য, গত ১২ বছরে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রেফতাররা প্রাথমিকভাবে কীভাবে প্রশ্নফাঁস করেন, কারা তাদের সহযোগিতা করে, কীভাবে তারা অর্থ লেনদেন করেন, সেসব টাকা কীভাবে তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন, তার অনেক তথ্য এরই মধ্যে তারা জানতে পেরেছে। সেসব তথ্য যাচাই করছে তারা।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডি সূত্র বলছে— প্রশ্নফাঁস করে চক্রের বেশির ভাগ সদস্যই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি টাকার মালিক হয়েছেন আবেদ আলী। ঢাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ও নগদ টাকাসহ অন্তত ৫০ কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন তিনি।
অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়া এই টাকায় অন্যদেরও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট রয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনেক ব্যাংক চেক জব্দ করা হয়েছে। চক্রের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তারা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
আরও ১৪ জনের নাম পেয়েছে সিআইডি
গতকাল সোমবার রাতে পল্টন থানায় পিএসসি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক নিপ্পন চন্দ্র। এতে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে ১৭ জনের বাইরে আরও ১৪ জন হলেন পিএসসির সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়সহ শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া, দীপক বনিক, মো. খোরশেদ আলম খোকন, কাজী মো. সুমন, এ কে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, গোলাম হামিদুর রহমান, মুহা. মিজানুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, এ টি এম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলাম ও কৌশিক দেবনাথ। তারা চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব তথ্যের যাচাই চলছে।
সম্পদে আবেদ আলীকে ছাড়িয়েছেন স্ত্রী শিল্পী
তথ্য বলছে— আবেদ আলী নামে-বেনামে নানা সম্পদ করেছেন। তার গ্রামে বহুতল বাড়ি রয়েছে। করেছেন বাগান বাড়িও। এছাড়াও তিনি ঢাকায় অনেক সম্পদ করেছেন। রাজধানীর পাইকপাড়ায় তার ছয় তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও শেওড়াপাড়ার ওয়াসা রোডে একটি ৯ তলা ভবনে রয়েছে তিনটি ফ্ল্যাট। তিনি যাতায়াত করতেন দামি একটি গাড়িতে।
আবেদ আলীর জমি বাড়ি ফ্ল্যাট গাড়ি ছাড়াও রয়েছে রিয়েল এস্টেট ও হোটেল ব্যবসা। কুয়াকাটায় তার হোটেল ব্যবসা রয়েছে। যদিও তিনি বিভিন্নজনের শেয়ারে তা চালু করতে চেয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, শেওড়াপাড়ার নয় তলা একটি ভবনে আবেদ আলীর মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট ছিল। সম্প্রতি তিনি দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেন। ভবনের পঞ্চম তলায় নিজের ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ভবনের পঞ্চম তলায় তার দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে এবং চতুর্থ তলায় একটি।
সিআইডি সূত্র বলছে, ধানমন্ডির ১৬ নম্বর রোডে আবেদ আলীর ছয় কোটি টাকা মূল্যের তিন হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ঢাকার চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে দুই কোটি টাকা মূল্যের ৩০০ বর্গফুটের দোকান, পূর্বাচলে ২০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১০ কাঠা জমি ও বাগেরহাটের গোপালকাঠি গ্রামে ২০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১০ কাঠা জমি রয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আবেদ আলীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোটা অংকের টাকা রয়েছে। এছাড়া তার একটি গাড়ি রয়েছে। বিভিন্ন সময় সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এসব অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। এসব অর্থ দিয়ে তিনি যেমন একদিকে বিলাসী জীবনযাপন করতেন, তেমনি সামাজিক কাজেও এসব অর্থ ব্যয় করতেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টাও করেছেন।
তবে আবেদ আলী বেশ ধুরন্ধর প্রকৃতির মানুষ। তিনি নিজের চাইতে স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার শিল্পীর নামে বেশি সম্পদ গড়েছেন। সিআইডির তথ্য বলছে— তার নামে ধানমন্ডির ১১ নম্বর রোডে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৪ হাজার ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটির বি ব্লকে ১০ কোটি টাকা মূল্যের বহুতল বাড়ি, মানিকগঞ্জের রাখোরা মৌজায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২০ বিঘা জমি, ঢাকার বাড্ডার সাঁতারকুল মৌজায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৮ বিঘা জমি, রাজধানীর পান্থপথে ৪ কোটি টাকা মূল্যের ৪০০ বর্গফুটের দোকান, রাজধানীর ৫৩, বায়তুল মোকাররমে ১০ কোটি টাকার ৩০০ বর্গফুটের দোকান, কক্সবাজারের টেকনাফে ৫ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ৩ বিঘা জমি, কক্সবাজার ইনানী সমুদ্র সৈকতে ১০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাপনাসহ ১ বিঘা জমি ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৬ কাঠা জমি রয়েছে।
চক্রের বাকিদের কী অবস্থা
প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তার মধ্যে ৬ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জন দেননি। ফলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে গ্রেফতারদের তথ্য বলছে, প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে শুধু আবেদ আলী কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামিয়েছেন— বিষয়টি এমন নয়। তার সঙ্গে যুক্ত অন্য আসামিরাও নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।
তাদেরই একজন সাজেদুল ইসলাম। প্রশ্নফাঁসকাণ্ডের এই আসামির বোন-ভগ্নিপতিও বিসিএস ক্যাডার। সাজেদুল নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা এলাকার বসিন্দা। সিএসসিতে তিনি অফিস সহায়কের চাকরি করলেও এলাকায় তিনি দানশীল ব্যক্তি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে— তিনি এলাকায় বেশ জায়গাজমি কিনেছেন। তার পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সুবর্ণচর থানার ওসি জানান, সাজেদুলের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
গ্রেফতার আসামিদের অন্যতম আবু জাফর। তিনি পিএসসির উপ-পরিচালক। ঢাকার মালিবাগে জ্যোতি নামে একটি কোচিং সেন্টার চালান। যার আড়ালেই করেন প্রশ্নের কেনাবেচা। এর মাধ্যমে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। পটুয়াখালী গলাচিপার এই বাসিন্দা পৈতৃক ভিটা কলাগাছিয়ায় করছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি। প্রথমে বাড়ির চারপাশে দেয়াল ঘেরাও আর মূলপটক নির্মাণ শেষে এখন মূল ভবনের কাজ ধরেছেন। সিআইডির কাছে সাজেদুলের দেওয়া তথ্য বলছে— শুধু রেলওয়ের প্রশ্নের জন্যই তাকে দেওয়া হয় ২ কোটি টাকা।
আলমগীর কবির প্রশ্নফাঁসকাণ্ডের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পিএসসির সহকারী পরিচালক তিনি। নওগাঁর বাসিন্দার ব্যাপারে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৮০ থেকে ৯০ জনকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগেও তার বাবা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। কিন্তু পিএসসিতে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর চাকরি হওয়ার পর বদলে যেতে থাকে তাদের অবস্থা। এরপর পদোন্নতি পেয়ে তিনি এখন সহকারী পরিচালক হয়েছেন।
ছোট ভাই হুমায়ুন কবির ছিলেন সৌদি প্রবাসী। সেখানে গাড়িচালকের চাকরি ছাড়িয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন আলমগীর, দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে চাকরি পাইয়ে। ছোট বোন মিনিও একই মন্ত্রণালয়ের স্টেনোগ্রাফার হিসেবে যোগ দেন। তিনি রাজশাহীতে কর্মরত। পিএসসিতে চাকরির পাশাপাশি আলমগীর বগুড়া ও নওগাঁয় কোচিং সেন্টার গড়ে তুলেছেন। এগুলোর মাধ্যমেই সরকারি চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করেন; যারা প্রশ্ন কিনে চাকরি পেতে আগ্রহী।
জাহাঙ্গীর আলম পিএসসির উপ-পরিচালক। তিনি স্বপরিবার নিয়ে থাকেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের ১ নম্বরসড়কের ৮/ও নম্বর ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে। জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান। ফলে ফ্ল্যাটটি এখন তালাবদ্ধ। ভবনের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর যে ফ্ল্যাটে থাকেন সেটি তিনি কিনেছেন। ২০১৯ সালে পরিবার নিয়ে এই ফ্ল্যাটে ওঠেন তিনি। তার একটি গাড়ি রয়েছে।
প্রশ্নফাঁসে জড়িত আবু সোলায়মান সোহেল কুমিল্লার বাসিন্দা। নিজ এলাকায় তিনি মিরপুরের বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল ঈদুল ফিতরের আগে বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমি কিনেছেন দেড় কোটি টাকায়। স্থানীয়রা বলেন, এলাকায় গুঞ্জন উঠেছিল সোহেল আমেরিকান একটি লটারিতে কোটি টাকা পেয়েছেন। সেই টাকায় তিনি বড় ব্যবসায়ী হয়েছেন।
যেভাবে প্রশ্নফাঁস করেন তারা
সিআইডি বলছে, প্রশ্নফাঁসের ঘটনার মূলে ছিলেন তিনজন। তারা পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির। এই তিনজনই মূলত প্রশ্নফাঁসে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। চক্রের অন্য সদস্যরা কেউ চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতেন, কেউ প্রশ্নপত্র পেয়ে তার সমাধান করতেন, আবার কেউ অর্থের লেনদেন করতেন।
সিআইডি সূত্র বলছে, পিএসসির মতো কঠিন জায়গায়ও চক্রের সদস্যরা প্রশ্নফাঁস করে সফল হয়েছেন। তারা নিজেদের মধ্যে প্রশ্নের তথ্য আদান-প্রদানের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের তথ্য আদান-প্রদান করেন বলে জানা গেছে। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাত স্থানে রেখে ওই প্রশ্নপত্র এবং তার উত্তর দিয়ে দেন। এছাড়া গুজব ছড়িয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করার ক্ষেত্রেও চক্রের সদস্যদের ভূমিকা পাওয়া গেছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তারা একাধিক নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িত।
প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ডসহ যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হবে জানিয়ে সিআইডি সূত্র বলছে, এই চক্রে পিএসসির অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়েছেন। এরা নানা কায়দায় প্রশ্নফাঁস করেন।
সিআইডি সূত্র বলছে, সিআইডির একটি সাইবার টিম আগের ও বর্তমান মামলা পর্যালোচনা করে প্রশ্নফাঁস চক্রটি ধরতে তৎপর রয়েছে। এসএসসি, এইচএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে সিআইডি।
শিক্ষিত লোকজন এই চক্রে জড়িত জানিয়ে সিআইডি সূত্র বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের বেশির ভাগ সদস্য শিক্ষিত। পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন।
সম্প্রতি এই ঘটনায় গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হয়। ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাদের মধ্যে ছয় আসামি জবানবন্দি দেন। তারা হলেন— পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী, অফিস সহায়ক (পিএসসির ডেসপাচ রাইডার) খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডেসপাচ) সাজেদুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিটন সরকার।
কারাগারে পাঠানো ১১ আসামি হলেন— পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র প্রিয়নাথ রায়, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশিদ, মো. জাহিদুল ইসলাম, আবু সোলায়মান মো. সোহেল এবং আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। -নিউজ ডেস্ক