ছেলের ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান দেশেই আছেন। দেশের নামকরা এক গণমাধ্যমের এক সপ্তাহের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে দেশেই আছেন মতিউর। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ নানা জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। অবস্থান বদল করছেন ঘন ঘন। আইনজীবীদের মতে, মতিউরের এই আত্মগোপন তাঁর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে কোনো বাধা হবে না।
মতিউর রহমান দেশে আছেন? নাকি দেশে নেই? এ নিয়ে জল ঘোলা কম হয়নি। গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে চুল ন্যাড়া করে দেশ ছেড়েছেন মতিউর। যদিও তাঁর দেশ ছাড়ার বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
মতিউরের আত্মগোপন, সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বা অফিসে যোগদান না করা নিয়ে দেশ ছাড়ার গুঞ্জন বাস্তবে রূপ নিচ্ছিল। দুদকের আইজীবীরাও পরিষ্কার না তাঁর অবস্থানের বিষয়ে।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র ও তার মোবাইলের লাইভ লোকেশন থেকে গণমাধ্যমটি নিশ্চিত হয়েছে যে, দেশেই আছেন মতিউর রহমান।
মতিউরের ব্যবহার করা তিনটি মোবাইল নম্বরের অবস্থান বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাঁর ব্যবহার করা গ্রামীণ ফোন নম্বরটি গত ২৬ জুন থেকে বন্ধ। সেটির সবশেষ অবস্থান ছিল রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। এছাড়া তাঁর রবি নম্বরটির সবশেষ অবস্থান ছিল ৪ জুলাই চট্টগ্রামের বাকালিয়ায়। সেদিন থেকেও বন্ধ ওই নম্বরটি। এছাড়া তাঁর ব্যবহার করা বাংলালিংক নম্বরটির সবশেষ অবস্থান ছিল গত ৬ জুলাই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। সেদিন থেকে বন্ধ ওই নম্বরটি।
মতিউর লাপাত্তা হলেও তাঁর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ ক্রোক করার আদেশও দিয়েছেন আদালত। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘আমাদের আইনে আছে উনি যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে সেটির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হবে। এ ছাড়া তিনি পলাতক থাকা অবস্থাতেই বিচারকার্য চালানোর আইন রয়েছে। সুতরাই সেই হিসেবেই চলবে।’
মতিউর অবৈধ সম্পদ অর্জনে ব্যবহার করেছেন শেয়ারবাজারকে। অবৈধ অর্থ উপার্জনে করেছেন একেরপর কারসাজি। তা প্রমাণিতও। এখন প্রশ্ন হলো, তিনি সত্যিই কি নিজেকে আড়াল করেছেন? নাকি তাঁকে কেউ আঁড়াল করে রাখছেন?
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদকে তাঁর বিরুদ্ধে চার দফা অভিযোগ ছিল, কিন্তু সেটির কোনো অগ্রগতি হয়নি। অর্থাৎ তাঁকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কিন্তু ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। এই একই মহল তাঁকে সুরক্ষা দিচ্ছে। সেই প্রশ্নটা ওঠা খুবই স্বাভাবিক।’ -নিউজ ডেস্ক