বুধবার , ২৪ জুলাই ২০২৪ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

ছেলের খুনিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি আবু সাঈদের বাবার

প্রতিবেদক
admin
জুলাই ২৪, ২০২৪ ১:০৭ অপরাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন দাবি করেছেন তার ছেলেকে যে গুলি করে মেরেছে তাকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক। এসময় আবু সাঈদের কবর দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে। কার বিরুদ্ধে মামলা করবো। সরকার তো ছেলেদের কোটার দাবি মেনে নিয়েছে। এখন শুধু আমার ছেলের খুনির বিচার দেখে যেতে চাই।

নিহত আবু সাঈদের বাবা আরো বলেন, আমার ছেলের ইচ্ছে ছিল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করবেন। কিন্তু ছেলেই আর দুনিয়াতে রইলো না। আমাদের দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলো। এখন আমার মনে হচ্ছে ছেলেকে ভার্সিটিতে পড়ানোয় কাল হইলো। ভার্সিটিতে না পড়াইলে মোর কলিজার ধন মারা গেলো না হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন আবু সাঈদ। এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। এ কারনে মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। রণক্ষেত্র পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও কয়েকরাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। আবু সাঈদ একাই অবিচল দাড়িয়ে তা মোকাবিলা করার চেষ্টা করেন। পুলিশের সামনে বুক উঁচিয়ে দেওয়া আবু সাঈদকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। বুকে গুলি বিদ্ধ হয়ে হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরদিন সকালে বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

আবু সাঈদ নিহতের ঘটনাসহ সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে তাজহাট থানায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার দিনই মামলাটি করেছেন তাজহাট থানার এসআই বিভুতি ভুষণ। পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) সায়েকুজ্জামান ফারুকীকে প্রধান করা হয়। অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটিকে উক্ত বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি প্রধান ড. মতিউর রহমান জানান, তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশের তদন্ত কমিটির কাজও চলমান রয়েছে উল্লেখ করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন জানান, নিহতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা তাজহাট থানার এসআই জিল্লুর রহমান জানান, এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। তিনি ছিলেন দরিদ্র পরিবারের অসহায় মা বাবার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তান। প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে ৯ ভাইবোনের মধ্যে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। অভাবের সংসারে অন্য সন্তানরা লেখাপড়া করতে না পারলেও আবু সাঈদ খালাসপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। পরে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। -নিউজ ডেস্ক

সর্বশেষ - রাজনীতি