প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৫:০৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪, ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ
মসজিদে যদি পাহারার প্রয়োজন না হয়, তাহলে হিন্দু ভাইদের মন্দিরে সাহারার প্রয়োজন হবে কেন -দিনাজপুরে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমার যদি বাড়িতে পাহারা না লাগে, আমার মসজিদে যদি পাহারার প্রয়োজন না হয়, তাহলে হিন্দু ভাইদের মন্দিরে সাহারার প্রয়োজন হবে কেন বলে প্রশ্ন করেন তিনি। আমরা এই ধরনের বৈষম্য চাই না। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে গেছে এর মাধ্যমে সকল বৈষম্যের কবর রচনা হোক।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকালে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর উত্তর জেলা শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, এই আন্দোলন কোন গোষ্ঠি বা দলের নয়, এই আন্দোলন আপামর জনগনের আন্দোলন। জনগণ রাস্তায় নেমে এসে এই আন্দোলন সফল করেছে। এখানে কোন নির্দিষ্ট ধর্মের লোকেরাও শুধু লড়াই করেনি। কেউ যদি জনতার এই আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায় তাহলে আবারো দেশের ১৮ কোটি জনগণ রুখে দিবে। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই বিপ্লব এই পরিবর্তন এই আন্দোলনের সফলতাকে অবশ্যি আমরা পাহারাদারি করবো। এর কোন ধরনের অপমান এই জাতি সহ্য করবে না। জামাযাত আমীর বলেন, আমরা এমন একটা দেশ, এমন একটি জগত চাই, যে দেশে জাতি, দল, ধর্ম নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে দেশে ও প্রবাসে যেখানেই যাক গর্বের সাথে বলবে আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। এখনে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ এখানে জন্মগতভাবে সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। আমাদেরকে নিয়ে যেন গর্ব করতে পারে এমন একটা জাতি আমরা চাই। জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর উত্তর জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ মোঃ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলান মমতাজ উদ্দিন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও জাগপা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আফতাব উদ্দিন মোল্লা, জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা আমীর মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইকবাল হোসেন, দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা রবিউল ইসলাম, দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাড. মাহবুবুর রহমান ভুট্টু, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ, দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতে নায়েবে আমীর মাওলানা একেএম আফজালুল আনাম, উত্তর জেলা জামাযাতের কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাড. মাইনুল আলম, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন, ওলামা মাশায়েকদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সোহরাব হোসাইন, দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খোদা বকস, দিনাজপুর শহর জামায়াতের আমীর মোঃ রেজাউল ইসলাম, দিনাজপুর শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ রেজওয়ানুল হক, দিনাজপুর উত্তর জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রেজাউল ইসলাম প্রমূখ।
এর আগে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান হ্যালিকপ্টারযোগে ঢাকা হতে দিনাজপুরে পৌঁছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রুদ্র সেনের পাহাড়পুরস্থ বাসভবনে যান এবং তার পিতা মাতার সাথে দেখা করেন। এছাড়া সমাবেশস্থে আগত শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন ও প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে নগদ দুই লক্ষ করে টাকা প্রদান করেন। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দিনাজপুর জেলার ৭ জন শহীদ হন। তারা হলেন-দিনাজপুর জেলা শহরের পাহাড়পুরের বাসিন্দা ও শাবি শিক্ষার্থী রুদ্র সেন, বিরল কবলা এলাকার বাসিন্দা মাদরাসা শিক্ষার্থী মোঃ মাসুম রেজা, বিরলের নাগরবাড়ীর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আব্দুল কাফি, একই উপজেলার পাকুড়া এলাকার রিক্সাচালক জয়নাল আবেদীন, দিনাজপুর সদর উপজেলার রানীগঞ্জ এহিয়া হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ রবিউল ইসলাম রাহুল, চিরিরবন্দর উপজেলার লক্ষিপুর বাসুদেবপুর গ্রামের গার্মেন্টসকর্মী মোঃ সুমন পাটোয়ারী ও বীরগঞ্জের ডাবরা জিনেশ্বরী গ্রামের গার্মেন্টসকর্মী মোঃ সেলিম উদ্দিন।
@2024