(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) শেরপুরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন নদীর পানি। বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং চেল্লাখালী নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ১৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে সকাল থেকে নতুন করে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার আরও ৬টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নতুন নতুন আরও এলাকার প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় শেরপুরের মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শেরপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ।
শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকারের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকার বেশি।
শেরপুরের যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে সে স্কুলগুলোকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রেজয়ানকে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র খোলা বিদ্যালয়গুলোতে আগামী কয়েকদিন বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায় পানি নেই সেখানে রেগুলার ক্লাস চলবে। কতগুলো বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে সে সংখ্যাটি আজ বিকেল জানা যাবে।
শনিবার সকাল থেকেই নালিতাবাড়ী উপজেলায় উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে সেনাবাহিনী। ৬টি স্পিডবোটের মাধ্যমে ৬০ জন সেনাসদস্য উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, পানিবন্দি মানুষদের সঠিকভাবে উদ্ধার করতে সফল হয়েছি। অনেককে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রানা বলেন, নালিতাবাড়ীতে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১২৩টি। এর মধ্যে ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জেলার বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারে ও শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একইসঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাচ্ছি। -নিউজ ডেস্ক