মাহবুবুল হক খান (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুরে সাবেক নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিরল পৌরসভার সাবেক মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আজাদ মনিসহ আওয়ামী লীগের ১৩৪ জন নেতাকর্মীর নামে দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় অজ্ঞানামা আরো ১৫০/২০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর ২০২৪) দিবাগত রাতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে মোঃ রবিউর ইসলাম (৩৫) এই মামলাটি করেন। মামলা নম্বর -৪৫। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখ ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দিনাজপুর জিলা স্কুলের সামনে ও দিনাজপুর পৌরসভার দক্ষিণে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দলবদ্ধ হয়ে মামলায় উল্লেখিত ১ নম্বর আসামী সাবেক নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী কালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও ২ নম্বর আসামী সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের পরিকল্পিত নির্দেশে ও হুকুমে তিন নম্বর হতে ১৩৪ নম্বর আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০/২০০ জন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও আওয়ামী লীগের অপরাপর সহযোগি ও অঙ্গসংগঠনের সদস্য ও সন্ত্রাসী ব্যক্তি ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী মিছিলে বে-আইনী আগ্নেয়াস্ত্র একনালা বন্দুক, দুই নালা বন্দুক, লোহার রড, হকিস্টিক এবং ইটের টুকরা দিয়ে ছাত্র জনতার শত শত লোককে হত্যা, জখম করার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। আসামিরা বাদিকে ও তার সাথে থাকা লোকজন এবং শত শত ছাত্র জনতার আন্দোলনের মিছিলে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারীভাবে গুলি বর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরন করে এবং লোহার রড, হকিস্টিক ও ইটের টুকরা দ্বারা বেপরোয়াভাবে ছাত্র জনতার মিছিলে চড়াও হয়ে ছাত্র জনতাকে গুরুতর জখম করে।
এ সময় আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে বাদির ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয় এবং ডান চোখের সানাম্য পূর্বদিকে ছররাগুলির স্লিন্টার বিদ্ধ হয়। তার বাম বাহু এবং বাম পাজরে আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির স্লিন্টার বিদ্ধ হয়। উক্ত গুলি এখনও অপসারিত হয়নি। এছাড়া তার সাথে থাকা হাফিজুর রহমান ও অন্যান্যরা আগ্নেয়াস্ত্রের ছুররা গুলিতে আহত হয়। এতে বাদি ও হাফিজুর রহমান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সাথে থাকা লোকজন বাদিকে দিনাজপুর গাওসুল আজম বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখানে প্রথমে চোখের চিকিৎসা করা হয়। পরবর্তীতে তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে জখমের চিকিৎসা করা হয়। তারপর রংপুর এবং পরবর্তীতে চিটাগাং চক্ষু ট্রেনিং কমপ্লেক্স এ চিকিৎসা গ্রহণ করেন মামলার বাদি রবিউর ইসলাম।
বাদির সাথে থাকা আহত অন্যান্য লোকজন প্রাথমিক চিকিৎসাগ্রহণ করেন। পরে মামলার বাদি রবিউল ইসলাম ঘটনার নির্দেশ দাতা ও হুকুমদাতা সাবেক নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১৫০/২০০ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেন।