(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় রোববার (২৭ অক্টোবর) আরও তিনজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১৮০ সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। রোববার নিহত সাংবাদিকরা হলেন- আল-আকসা টিভির সৈয়দ রেদওয়ান, বার্তাসংস্থা সানাদের আবু সালমিয়া এবং আল-কুদস ফাউন্ডেশনের হানিন বারুদ। খবর আল-জাজিরা ও টাইমস অব ইসরায়েলের। ফিলিস্তিনি সংবাদিকদের নির্বিচারে হত্যা ও তাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন থামাতে আন্তর্জাতিক সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে গাজার গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গত বুধবার জানিয়েছে, তারা গাজা উপত্যকায় এমন নথি পেয়েছে, যাতে দেখায় গেছে আল জাজিরার ছয়জন সক্রিয় সাংবাদিক হামাস এবং ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদের সদস্য। তবে আলজাজিরা ইসরায়েলের এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আইডিএফ আলজাজিরার ওইসব সাংবাদিকদের নাম উল্লেখ করেছে। তারা হলেন- আনাস আল-শরিফ, আলা সালামেহ, হোসাম শাবাত, আশরাফ আল-সররাজ, ইসমাইল আবু ওমর এবং তালাল আল-আররুকি।
আইডিএফ-এর মতে, আল-শরিফ হামাসের নুসিরাত ব্যাটালিয়নে একটি রকেট লঞ্চিং স্কোয়াডের প্রধান এবং নুখবা ফোর্স কোম্পানির সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন, ইসলামি জিহাদে শাবোরা ব্যাটালিয়নের প্রচার ইউনিটের উপপ্রধান হিসেবে সালামেহ, হামাসের বেইত হ্যানউন ব্যাটালিয়নে স্নাইপার হিসেবে শাবাত, ইসলামি জিহাদের বুরেজ ব্যাটালিয়নের সদস্য হিসেবে আল-সাররাজ, আবু ওমর পূর্ব খান ইউনিস ব্যাটালিয়নে ট্রেনিং কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে (কয়েক মাস আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আহত হয়েছিলেন) এবং হামাসের নুসাইরাত ব্যাটালিয়নে টিম কমান্ডার হিসেবে আল-আররুকি কাজ করছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যে নথি প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে কর্মীদের স্প্রেডশিট, প্রশিক্ষণ কোর্সের তালিকা, টেলিফোন বই এবং বেতনের নথি দেখানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নথিগুলো দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করে যে ওই সাংবাদিকরা হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখার সদস্য হিসাবে কাজ করেন।
তবে, আলজাজিরা ইসরায়েলের এমন মনগড়া অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেছে, নিজেদের অপরাধ ঢাকতে এটি ইসরায়েলের একটি অপকৌশল মাত্র। সংবাদ সংগ্রহের কাজ করতে গিয়ে দখলদার ইসরায়েলের হামলায় ১৮০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হওয়ার পাশাপাশি গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া এবং ১ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে পঙ্গু ও গরিুতর আহত হয়েছেন ইসরায়েলি বর্বরতায়।
ইসরায়েল গাজায় তার এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যা মামলার মুখোমুখিও হয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর ওইদিনই গাজায় নির্বিচার হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা থেকে হামাসকে নির্মূলের নামে হামলা চালালেও এসব হামলায় প্রাণ হারানো বেশিরভাগ মানুষ গাজার সাধারণ বাসিন্দা। -নিউজ ডেস্ক