মো. শাহ্ আলম নূর আকাশ, সম্পাদক (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনের ধারাবাহিকতায় চব্বিশে আমাদের দ্বিতীয় বিজয়। সেই চব্বিশেই বর্ষসেরা দেশের মুকুট অর্জন করল বাংলাদেশ। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান দেড় দশকের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। স্বৈরাচারের এই পতন এবং জুলাই বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর বিষয়টিই দেশকে তালিকার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- সেরা ধনী, সবচেয়ে সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থানের অধিকারী এসব বিবেচনায় নয়, বরং গত ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে- সেই বিচারে সেরা দেশ নির্বাচন করা হয়েছে। এ বিচারে বর্ষসেরা নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। রানারআপ সিরিয়া। পরের তিনটি দেশ- পোল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আর্জেন্টিনা। ইকোনমিস্টের ভাষায়- ‘আমাদের বিজয়ী দেশ বাংলাদেশ। তারা স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। যিনি ১৫ বছর ধরে ব্যাপকভাবে দমনপীড়ন করেন। নির্বাচনে জালিয়াতি করেন, বিরোধীদের কারাবন্দি করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তাঁর আমলে বিরাট অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথের আন্দোলনে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে সহিংসতার ইতিহাস আছে। তবে ছাত্র-জনতা, সেনাবাহিনী এবং নাগরিক সমাজের সমর্থন পাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ ও প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তারা রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছেন। দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত সাম্যের সমাজ গঠন, সৎ মানুষের নেতৃত্বে সুশাসন এবং প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তাদের লক্ষ্য। শান্তিতে নোবলজয়ী বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার এসব লক্ষ্য পূরণে সফল হোক। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হোক। জনগণের ভোটে, তাদের পছন্দের পরীক্ষিত সৎ ও আদর্শবাদী মানুষের নেতৃত্বে গণমানুষের সরকার দেশ শাসন নয়, পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করুক। বিশ্বের আরও বিভিন্ন মানদণ্ডের বিচারে বাংলাদেশ মর্যাদাসম্পন্ন শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি লাভ করুক- জাতির ঐকান্তিক স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা সেটাই। -ডেস্ক