(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন এবং পাশের ভবনে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। রাত ১০টার কিছু পর বিক্ষোভের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং প্রতিবাদকারীরা বাসভবনটির সামনে অবস্থান নেন, সঙ্গে স্লোগান দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ভবনের বাইরে আগুন এবং ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠতে দেখে শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হয়। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবাদকারীরা শুধু আগুন ধরায়নি, তারা বাড়ির সীমানা ভাঙতে শুরু করেছে এবং ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালাচ্ছে।
রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে, প্রধান ভবনের পূর্ব পাশে আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং বাড়িটি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবাদকারীরা বাড়ির সীমানা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালাচ্ছিল। অনেকেই হাতুড়ি দিয়ে দেয়াল ভাঙছিল এবং বাড়ির অংশবিশেষ নষ্ট করছিল।
এর আগে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে, শেখ মুজিবের বাসভবনের তৃতীয় তলায় আগুন ধরানো হয়। ভবনটি আগে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আগুন প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং রাত ১১টা নাগাদ তা আরও বাড়তে থাকে।
ওই সময়, ঘটনাস্থলে একটি বড় ক্রেন আনা হয়, যা ভবনটি ভেঙে ফেলতে ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পাশের একটি ভবনেও আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
প্রতিবাদকারীরা রাত ১১টা পর্যন্ত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে অবস্থান করে এবং স্বৈরাচারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। তারা ‘স্বৈরাচারের আস্তানা ভেঙে দাও’ এবং ‘গুড়িয়ে দাও’ স্লোগান শুনিয়ে সড়কে বিক্ষোভ চালাচ্ছিল।
চালাচ্ছি।
এদিন সন্ধ্যায়, রাত ৮টার দিকে, শত শত বিক্ষোভকারী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পৌঁছান এবং তারা বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন।
এ ঘটনার পেছনে সামাজিক মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টগুলোর প্রভাব ছিল, যার মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’
শেখ মুজিবুর রহমানের এই বাসভবনটি মুক্তিযুদ্ধের আগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেখানে তিনি স্বাধীনতার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করতেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবার এখানে নিহত হন। এরপর থেকে এটি একটি স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে বিক্ষুব্ধ জনতা এই বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছিল। এরপর থেকে বাড়িটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। -নিউজ ডেস্ক