(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগমুহূর্তে একের পর এক দুঃসংবাদ। ছিটকে পড়েন নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। চোটের কাছে হার মানতে হয় তারকা পেসার জস হ্যাজলউডকেও। মার্কাস স্টয়নিসের আচমকা ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা অস্ট্রেলিয়াকে যেন আরও ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শ্রীলঙ্কার কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা ওয়ানডের বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের আলোচনার টেবিল থেকেই আড়াল করে দিচ্ছিল অনেকটাই। কিন্তু দলটা যখন অস্ট্রেলিয়া, চ্যাম্পিয়নের মতো ফিরে আসাটা হয়তো তাদের ললাটেই লেখা।
বেন ডাকেটের মতো অজস্র রেকর্ডে ভরপুর ইনিংস নেই। তবে ক্রিকেট যে টিম গেইম, সেটার একেবারে আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকল অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসটা। ম্যাথু শর্ট, মার্নাস ল্যাবুশেন কিংবা অ্যালেক্স ক্যারি প্রত্যেকেই ধীরে ধীরে বড় করেছেন অজিদের ইনিংস। নিজের অভিষেক ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে শেষ পর্যন্ত ৮৬ বলে ১২০ রানে টিকে থাকলেন জশ ইংলিস।
৩৫২ রানের রেকর্ড রান তাড়া করে জিততে হলে অস্ট্রেলিয়ার জন্যেও ইতিহাস গড়তে হতো। অস্ট্রেলিয়া সেই কাজটা করেছে দারুণভাবে। শুরুতে ট্রাভিস হেড আর স্টিভ স্মিথের উইকেট হারালেও ম্যাচ থেকে নিজেদের ছিটকে যেতে দেয়নি অজি ব্যাটাররা। ম্যাথু শর্ট আর মার্নাস ল্যাবুশেনরা ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, অ্যালেক্ম ক্যারিও দারুণ ব্যাট চালালেন। আর
শেষ দিকে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে জস ইংলিশের ব্যাটে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই শেষ দুই আসরে কোন জয় না পাওয়া দলটাই ২০২৫ আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়ের দেখা পেল।
এর আগে দিনের শুরুতেই টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। অ্যালেক্স ক্যারির দুটো দারুণ ক্যাচ কেড়ে নিয়েছিল শিরোনাম। কিন্তু সব আলো ছিল মূলত বেন ডাকেটের ওপরে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একাধিক ইতিহাস গড়ে আজ খেলেছেন ১৬৫ রানের ম্যারাথন ইনিংস।
ডাকেট-রুট মিলে অস্ট্রেলিয়ার হতাশা কেবলই বাড়িয়েছেন। দুজন মিলে গড়েন ১৫৮ রানের জুটি। যা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেকোনো জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৭৮ বলে মাত্র ৪টি চারের বাউন্ডারিতে ৬৮ রান করেছেন রুট। অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে তিনিও একাধিক রেকর্ড গড়েছেন। এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি গড় জো রুটের (৫৫.৪৪)। এ ছাড়া আগে ব্যাট করতে নেমে তিনিই ইংল্যান্ডের জার্সিতে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক (৩৭১৯)।
রানতাড়া করতে নেমে খেই হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। দুই নির্ভরযোগ্য তারকা ট্রাভিস হেড আর স্টিভ স্মিথ ফেরেন দ্রুতই। এরপরেই ল্যাবুশেন আর শর্টের ৯৫ রানের জুটি। অনেকটা দিন পর ওয়ানডে ফরম্যাটে ফিফটির খুব কাছে গিয়েও আদিল রশিদের বলে আউট হতে হয়েছে ল্যাবুশেনকে। তবে অপরপ্রান্তে থাকা শর্ট ঠিকই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। যদিও ল্যাবুশেনের পর তাকেও খুব একটা সময় পায়নি অস্ট্রেলিয়া।
১৩৬ রানে ৪ উইকেটের পতনের পর দলের হাল ধরেন ক্যারি এবং ইংলিস। দুই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের জুটি ১৪৬ রানের। দুজনেই অবদান রেখেছেন ঠিক ঠিক ৬৯ রান করে। অ্যালেক্স ক্যারি ব্যক্তিগত ৬৯ করে বিদায় নিলে খানিক চাপে পড়ে অজিরা।
তবে অভিজ্ঞ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ছিলেন ভরসা হয়ে। শেষ পর্যন্ত ইংলিশ আর ম্যাক্মওয়েল আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি। ৩৬ বলে দুজনের ৭৪ রানের জুটিতে দলের জয় নিশ্চিত হয়। ৫ উইকেটে ৩৫৬ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ইংলিশ বোলাররা কেউই তেমন সুবিধা করতে পারেননি। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন আর্চার, আদিল রশিদ ও মার্ক উডরা। -নিউজ ডেস্ক