(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টার দিকে এই কর্মসূচি শুরু হয়— অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে। কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুরুতে এনসিপির নেতাকর্মীরাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যোগ দেন জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এতে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়।
এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করেছে। মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করেছে। একটি দল যদি বারবার ভোট লুট করে, তখন তাকে আর রাজনীতিতে রাখার প্রয়োজন নেই। আন্দোলনের শুরু থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। রাত ৪টার দিকে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানান। এরপর আন্দোলনকারীরা একযোগে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তারা বলেন, ‘ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’। আন্দোলনে যোগ দেওয়া নেতারা দাবি করেন— আওয়ামী লীগ গণহত্যার দায়ে দায়ী। তাদের রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
শুক্রবার সকাল থেকেই জামায়াতের অন্যান্য নেতারাও কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশের মানুষ জুলুমের শিকার। আওয়ামী লীগ দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখন সময় এসেছে তাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার।
এই আন্দোলনে এনসিপি, জামায়াত, শিবির ছাড়াও কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। তারা বলছেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগবিরোধী লড়াইয়ে নামতে হবে। যমুনার সামনে তৈরি হচ্ছে একটি অঘোষিত বিরোধী জোটের চেহারা।
আন্দোলনের পুরো সময় জুড়েই নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। র্যাব, পুলিশ ও ডিবি সদস্যরা এলাকায় টহল দিয়েছে। তবে তারা কোনো রকম বলপ্রয়োগ করেনি। আন্দোলনকারীরাও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন যতক্ষণ না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বাদ জুমা বড় জমায়েতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই আন্দোলন থামবে না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’ -ডেস্ক রিপোর্ট