(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) ভুয়া ডাক্তারি সনদে চাকরি নিয়ে সরকারের অর্ধকোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষসহ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২০ মে) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু এই চার্জশিট দাখিল করেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (আয়ুর্বেদিক মেডিসিন) ডা. আজম দৌলত আল মামুন এবং ওই হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ কাম অধীক্ষক ডা. রাহিমা আক্তার খাতুন।
দুদকের তদন্তে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) শীর্ষক অপারেশন প্লানের অন্তর্ভুক্ত আসামি সহকারী অধ্যাপক (আয়ুর্বেদিক মেডিসিন) পদে নিয়োগ ও পদায়নকৃত আসামি ডা. আ.জ.ম. দৌলত আল মামুনের আবেদনের সঙ্গে দাখিলকৃত আবেদনপত্রে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন আয়ুর্বেদিক মেডিসিন (পিজিডিএএম) ডিগ্রি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন হতে ২০০৭ সনে অর্জন করেন।
কিন্তু তদন্তকালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন নামক প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি আয়ুর্বেদিক মেডিসিনে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদানের কোনো প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে তার এই পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রি গ্রহণের সার্টিফিকেটটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করেছেন।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী, আসামি ডা. আ.জ.ম. দৌলত আল মামুনের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ভুয়া ডিপ্লোমা ডিগ্রি ব্যবহার করে সহকারী অধ্যাপক (আয়ুর্বেদিক মেডিসিন) পদে নিয়োগ লাভ করেছেন।
তদন্তে আরও বলা হয়েছে, আসামি ডা. আ.জ.ম. দৌলত আল মামুনকে সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাম অধীক্ষক ডা. রাহিমা আক্তার খাতুন একটি অভিজ্ঞতার সনদপত্র দিয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতার সনদপত্রে ডা. আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন তার প্রতিষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত অনারারী প্রভাষক পদে কর্মরত ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
তদন্তে দেখা যায়, ওই পদে ডা. আ.জ.ম. দৌলত আল মামুনকে প্রভাষক (সার্জারি বিভাগ) পদে অস্থায়ী, অবৈতনিক ও খন্ডকালীন নিয়োগ দেওয়া হলেও পরবর্তীতে পূর্বোক্ত খন্ডকালীন অবৈতনিক অস্থায়ী চিকিৎসককে প্রভাষক ও মেডিকেল অফিসার হিসাবে কাজ করার আদেশ বাতিল করা হয়।
তা সত্ত্বেও পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাম অধীক্ষক আসামি ডা. রাহিমা আক্তার খাতুন ১নং আসামিকে চার বছরের অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ দেন। এভাবে ভুয়া সনদে চাকরি নিয়ে বেতনভাতা বাবদ সরকারের ৬২ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪৭ টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধ করেছেন। -ডেস্ক রিপোর্ট