প্রতিনিধি ৬ নভেম্বর ২০২২ , ৬:৫৪:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ মোকাররম হোসেন (দিনাজপুর২৪.কম) শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুর আনুমানিক সময় ১২টা ৪৫ মিনিটে দিনাজপুর শহরোস্থ রাজবাটি গোলামপাড়া গ্রামের জুয়েলের স্ত্রী ফেন্সি (২০) এর পরক্রীয়া প্রেম জানতে পেরে হতভাগা স্বামী সেটি সহ্য করতে না পেরে নিজের পিতার ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত জুয়েলের পরিবারের অভিযোগ বার বার মানুষিক নির্যাতন এবং জুয়েলের শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর মারধরের কারণে ও তার স্ত্রী ফেন্সির সঙ্গে অন্য ছেলে একজন কাঠমিস্ত্রি ইমাম আলী নামীয় লম্পটের সাথে অবৈধ সম্পর্ক-পরক্রীয়ার কারণে জুয়েল নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর সময় জুয়েল ১ বছরের মেয়ে কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায় যে, ফেন্সি চাচা শুশুড়ের ছেলে মিনারকে মোবাইলে কল দিয়ে বলে দেখ তোমার ভাই জুয়েল ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁসি দিচ্ছে। তখন সময় ছিল দুপুর ১২টা বেজে ২০ মিনিট। ঐ মুহুর্তে মিনার তার খড়ির কারখানায় ছিল এবং কাষ্টমারদেরকে খড়ি বিক্রি করছিল। কাষ্টমার থাকায় সে না গিয়ে তখন তার বড় ভাই লিটনের স্ত্রী লাবণীকে বিষয়টি জানায় জুয়েল নাকি গলায় ফাঁসি দিচ্ছে। লাবণী গিয়ে দেখে সে জুয়েলের ঘরটির দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় পরবর্তীতে আবার কিছুক্ষণ পরই ফেন্সির ফুপাতো বোন সাথী মিনারকে ফাঁসি লটকানোর বিষয়টি দেখার জন্য সেখানে আবার যাইতে বলে। তখন মিনার, লাবণীসহ কয়েক মিলে জুয়েলের ঘরে দেখে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তখনও সে জীবিত ছিল। সবাই মিলে দরজা ভেঙ্গে তাকে বাঁচানোর চেষ্টায় হাসপাতালে অটোবাইকযোগে নেয়ার পথে জুয়েলের মৃত্যু ঘটে। মৃত জুয়েলের পিতা রংমিস্ত্রি মোঃ খোকন এবং মাতা জুলেখা বেগম এ প্রতিনিধিকে জানান, তার ছেলের মৃত্যুর আগের দিন জুয়েলের শ্বশুড় মোঃ ফিরোজ আলী ও শ্বাশুড়ী রাবেয়া তাকে ফকিরপাড়া-নতুনপাড়া এলাকায় তাকে বাসায় বেঁধে পুরো ১ ঘন্টা নির্যাতন করে মারধর করে এবং পরক্রীয়া বিষয়টি যেন কেউ জানতে না পেরে তাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে ভয়ভীতি দেখায়। পরে সে মনের ক্ষোভে-দুঃখে গলায় ফাঁসি দেয়।
এলাকাবাসী এবং স্থানীয়রা এ প্রতিনিধিকে জানান, জুয়েল গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যার খবর পেয়েও তার স্ত্রী ফেন্সিসহ লাশ দেখার জন্য তার পরিবারের কোন সদস্য আসেনি। ফেন্সির বিয়ের পর থেকে বেশ কয়েক জায়গায় অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তার মৃত স্বামী জুয়েল বার বার নিষেধ করলেও ফেন্সি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। যার ফলে তার স্বামী জুয়েলের অকাল মৃত্যু হল। মৃত জুয়েল পেশায় ছিল একজন মুদি দোকানদার। জুয়েলের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া পড়েছে।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, নিহতের পিতা মোঃ খোকন বলেন, এটি সাধারণ মৃত্যু নয়, এটি হল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তার বাবা খোকন আরো জানান, লাশ দাফন শেষে তার বৌমা ফেন্সিগং বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।