(দিনাজপুর২৪.কম) মালয়েশিয়ার নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট আরও বেড়েছে। রোববার দেশটির রাজনৈতিক নেতারা নতুন জোট সরকার গঠনের জন্য জোরালো উদ্যোগ শুরু করেছেন। এই নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলের নেতার ভূমিকা পালনকারী আনোয়ার ইব্রাহীম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন, দুজন বলেছেন যে তারা অন্যান্য দলের সমর্থন নিয়ে জোট সরকার গঠন করতে পারবেন। তবে দলগুলোর নাম জানাননি ২ জনের কেউই।
নির্বাচনের ফল
রোববার ভোরে মালয়েশিয়ার নির্বাচন কমিশন বলেছে, ২২২ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট সর্বোচ্চ ৮২টি আসন পেয়েছে আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পেরিকাতান ন্যাসিওনাল (পিএন) ৭৩টি আসনে জয় পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের বারিসান ন্যাসিওনাল ৩০টি আসন পেয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য ন্যূনতম ১১২টি আসনে জয়লাভ করতে হবে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবা মাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস এর প্রতিবেদন মতে, তবে সব মিলিয়ে মুহিউদ্দিনের জোটের হাতে ৭৯টি আসন রয়েছে। জোটের অন্যতম অংশীদার গাবুনগান রাকায়াত সাবাহ (জিআরএস) আরও ৬টি আসন জিতেছে।
মুহিউদ্দিনের জোটের উত্থানকে ‘তৃতীয় শক্তির উত্থান’ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এই জোটের অন্যতম সদস্য হচ্ছে একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল, যারা দেশটিতে শরিয়া আইন প্রচলনে আগ্রহী। এই জোটের প্রার্থীরা বারিসান অঞ্চলের শক্তিশালী দল ইউনাইটেড মালয়’স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করেছে।
কী হবে
বিশ্লেষকদের মতে, মুহিউদ্দিনের জোট বারিসান ও অন্য একটি দলের সমন্বয়ে সরকার গঠন করবে। তবে আনোয়ার বা মুহিউদ্দিন কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে সংখ্যালঘু সরকারও গঠিত হতে পারে।
মুহিউদ্দিন জানান, তিনি আনোয়ারের দল ছাড়া অন্য যেকোনো দলের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। রোববার তিনি বোর্নিও দ্বীপের সাবাহ ও সারাওয়াক প্রদেশের আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব তৈরির বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে নিশ্চিত করেন।
তবে আনোয়ার জানাননি তিনি কাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন। এ মাসের শুরুতে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ‘মৌলিক আদর্শগত পার্থক্যের’ কথা বলে সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে মুহিউদ্দিন ও ইসমাইলের জোটকে নাকচ করে দেন।
রাজার ভূমিকা
মালয়েশিয়ার রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ চাইলে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নির্ধারণ করতে পারেন। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, রাজার তেমন কোনো প্রশাসনিক ভূমিকা নেই। তবে বেশিরভাগ নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের নেতৃত্ব দিতে পারবেন এরকম একজন আইনপ্রণেতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করার ক্ষমতা তার আছে। সাধারণত রাজা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষমতা ব্যবহার করেন না। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে রাজার প্রভাব বেড়েছে।
২০২০ সালে অভিজ্ঞ নেতা মাহাথির মোহাম্মদের সরকারের পতন হলে রাজা আল-সুলতান মুহিউদ্দিনকে পরবর্তী নেতা হিসেবে নির্বাচন করেন। এর আগে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন কার পেছনে আছে তা জানতে ২২২ জন আইনপ্রণেতার সাক্ষাৎকার নেন। মুহিউদ্দিনের জোটেরও পতন হলে তিনি ইসমাইলকে নির্বাচন করেন। -অনলাইন ডেস্ক