• Top News

    খালেদার পক্ষে কথা বলা বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধি কম: প্রধানমন্ত্রী

      প্রতিনিধি ৬ ডিসেম্বর ২০২২ , ৪:৫৫:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

    (দিনাজপুর২৪.কম) খালেদার পক্ষে কথা বলা বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধি কম বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা এমার্জেন্সি সরকার করেছিল সেই ফখরুদ্দিন-ইয়াজউদ্দিন সবাই বিএনপি। তারা কিন্তু আমাকে গ্রেফতার করেছিল, খালেদা জিয়াকে নয়। তাদের হাতের এই মামলায় খালেদাকে গ্রেফতার করেছে। এতিমের টাকা মেরে দিয়েছে। এ কারণেই খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। যারা তার পক্ষে কথা বলে, তারা আসলে বুদ্ধিজীবী নয়, বরং তাদের বুদ্ধিই কম।
    মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০ তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আমরা উৎখাত করেছি। এরশাদকে উৎখাত করেছি। জিয়াকে উৎখাত করতে পারতাম। কিন্তু তার আগেই সে মারা গেল।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে আন্দোলনের সন্ত্রাস করে ৩০০০ মানুষ হত্যা করা। বাস রেল লঞ্চ কোন কিছুই রেহাই পায়নি। তারা মানুষ হত্যা করেছে।

    খালেদা জিয়া হুমকি দিয়েছিল আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে ছাত্রদলের যথেষ্ট। তারা অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর আমি বই খাতা কলম তুলে দিয়েছিলাম। ছাত্ররা শিক্ষা গ্রহণ করবে। দেশের দায়িত্বভার ভবিষ্যতে নেবে। দেশকে নেতৃত্ব দেবে। তোমরা শুধু নিজেরাই শিক্ষা নেবে না তোমরা যখন বাড়িতে যাবে কেউ যদি নিরক্ষর থাকে তাদের স্বাক্ষর জ্ঞান দেবে। ছাত্ররা নিজ এলাকায় গিয়ে শিক্ষাদান করেছিল তার রিপোর্ট আমার কাছে এসেছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপুরীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। ইতিহাস বিকৃতি, জাতির পিতার ভাষণ নিষিদ্ধ, জয় বাংলার স্লোগান নিষিদ্ধ জিয়াউর রহমান করেছেন। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা এসেছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর ছিলেন। একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ। কোন রির্জাভ ছিল না। ২৭০ টার উপরে সড়ক সেতু বিধ্বস্ত ছিল। ২৭৫টির মতো সড়ক ও রেল শুধু বিধ্বস্ত ছিল। চট্টগ্রাম ও মংলা পোর্ট বিধ্বস্ত ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করে বঙ্গবন্ধু। এই জামাত শিবির আল বাউল বদর রাজাকাররা পাকিস্তানি হানাদার এর হাতে তুলে দেয়।

    একাত্তরের প্রঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অনেক জীবিত মা-বোন নিজের পরিচয় দিতে ইতস্তত ছিল। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তোমরা লিখে দাও বাবার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন জাতির পিতা মেয়েদের ভিতরের সাহস সংসার করেছিলেন।

    আমরা ১৫ আগস্ট বাবা মা ভাই বোন হারিয়েছি। আমরা হারিয়েছি আপনজন। কিন্তু বাঙালি জাতি হারিয়েছে শহীদদের অবমাননা। বাংলাদেশ ছাড়িয়েছিল দরিদ্র মানুষের খাবার যোগাড় করার অধিকার। জনগণের অধিকার বন্দী করে নিয়েছিল ক্যান্টনমেন্টে। যারা নারদ জনসনকারী লুটপাটকারী অগ্নি সংযোগকারী তারাই ক্ষমতায় ছিল। ১৫ আগস্টের খুনিদের পক্ষে দিয়েছিল। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বানিয়েছিল বিভিন্ন দেশে।
    এরশাদ খালেদা জিয়া একই কাজ করেছিল একই কাজ করেছিল।  যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, আমাদের লক্ষ্য ছিল হারানো গৌরব ফিরে পাওয়া। জাতির পিতা কে হত্যা করে যারা বলে গণতন্ত্র এসেছে। জনগণের অধিকার হরণ করে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে রাখা কি গণতন্ত্র?
    আমাদের অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষের জিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে একই সুরে কথা বলেছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের আইবির রহমান সহ 24 জন মানুষকে হত্যা করেছে। হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
    তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগনে বিশ্বাস করে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। আগামীতেও জনগণের ভোটের নির্বাচিত হবে। আমাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বন্দী করল। সংসদ ভবনের একটি ভবনে সেখানে রাখা হলো। আমি সেখানে বসেই রূপকল্প একুশ প্রণয়ন করি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের বন্ধন করব। আমি সেটা করতে পেরেছি। কওনা শংকর এর পর আসলো ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা পাব। সেই পরিকল্পনা করে রেখেছি আমরা। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণের সময় একমাত্র ছাত্রলীগ রাজনৈতিক সংঘর হিসেবে কাজ করেছে। তাই ছাত্রলীগকে আমি ধন্যবাদ জানাই অভিনন্দন জানাই দুঃসময়ে কাজ করার জন্য। সিলেটে বন্যা হল মানুষ কিছু করতে পারে না। আমরা তো রাস্তাঘাট করে দিয়েছি, সেখানে নৌকা নাই শুধু রাস্তা। আমি সেখানে বিমান বাহিনীর নৌ বাহিনী পুলিশ প্রশাসন সে সবাইকে কাজে লাগিয়েছি। সেখানে ছাত্রলীগ যুবলীগ মহিলা আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ সবাইকে কাজে লাগিয়েছি। আমাকে সঙ্গে সঙ্গে ছবি পাঠিয়েছে একেক এলাকার। সেখানে আমি সেনাবাহিনী প্রধানকে জানিয়েছি। তারা বাহিনী পাঠিয়েছে। ওই দুর্গ মেলাতে ছাত্রলীগ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।

    তিনি বলেন, যারা এদেশে স্বাধীনতার চায়নি। তাড়াতাড়ি দেশের উন্নয়ন কখনো মেনে নেবে না। বাংলাদেশ নাকি কিছুই হয়নি। বাংলাদেশ নাকি শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ৬৬ ভাগ সাক্ষরতার উন্নতি করেছিলাম ৯৬ সালে ক্ষমতা আসার পরে। আজকে সাক্ষরতার হার ৭৫ ভাগে উন্নত করতে পেরেছি। দুই কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে ভিত্তি দিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যের হার ৪০ ভাগ ছিল। সেখানে 20 ভাগে নামিয়ে এনেছি। করোনার সময় বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। করোনা টেস্টে টাকা নেইনি। প্রায় ৩৫ লাখ মানুষকে টাকা পাঠিয়েছি। অনলাইনে নগদ টাকা পাঠিয়েছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের সুষ্ঠুভাবে চলে তার জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। গার্মেন্টসে ঠিকমতো চলে তার জন্য প্রনোদনা দিয়েছি। কৃষকের বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছাত্রলীগ ধান কেটে দিয়েছে। আওয়ামী যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবী লীগ, শ্রমিক লীগ ধান কেটে দিয়েছি। এর অগ্রভাগে ছিল ছাত্রলীগ। এদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ছাত্রলীগের ভূমিকা অপরিসীম। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই একমাত্র টানেল করেছে। এখন মেট্রো রেল হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার প্রসার করেছি। যাতে দক্ষ জনবল গড়ে ওঠে। বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। শিক্ষা ছাড়া কোন দেশ কখনো উন্নতি করতে পারে না। আমি ছাত্রদের বলবো যে যাই করুক না কেন লেখাপড়া শিখতে হবে। লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে হবে।  আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। শুধু পড়াশোনা করে চাকরির পেছনে না ছুটে যাতে নিজে কিছু করতে পারে সে ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছি। বিশেষ প্রনোদনা দিয়েছি যাতে সকলের কিছু কাজ করতে পারে। কারিগরি শিক্ষা ৯৭.২ ভাগে উত্তীর্ণ করেছি। আমাদের যুব সমাজ আমাদের ভবিষ্যৎ। ৪১ এর সৈনিক কারা হবে আজকের যুব সমাজ। ১০০ টা অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা করে দিয়েছি।

    সরকার প্রধান বলেন, কিছু গুজব হচ্ছে কি ব্যাংকে টাকা নেই? আমি একটা কথা স্পষ্ট জানতে চাই, আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সঙ্গে কথা বলেছি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি আমাদের কোন ব্যাংকে টাকার কোন ঘাটতি নেই। গুজবে কেউ কান দেবেন না। এক ছেলে মানুষ এ ধরনের বিভ্রান্ত করে মানুষকে ভাওতাবাজি দিয়ে গুজব ছড়াতে চাই। কয়টার দিকে সকলের বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা ৩৫ লাখ মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। যদি কেউ ভূমিহীন থাকেন আমাকে নাম ঠিকানা দিলে ব্যবস্থা করে দেব। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ভরে গেছে। আমি ছাত্রলীগকে বলবো এর বিরুদ্ধে তোমরা বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন যে কাজ করেছে সেগুলো তুলে দেবে। জাতির পিতা সোনার বাংলা করার জন্য সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। আমি আশা করি সেই সোনার মানুষ ছাত্রলী। বাংলাদেশের খাবারের কোন অভাব নেই। প্রচুর পরিমাণে খাবার আছে। প্রচুর আমন হয়েছে। 

    যার যেখানে যাদেরকে জমি আছে ফসল উৎপাদন করতে হবে। নিজে নিজেরা উত্তোলন করবেন। যাতে খাদ্যে কোন ঘাটতি না হয়। বিদ্যুৎ পানি ক্যাশ ব্যবহারের প্রত্যেককে সাশ্রয়ী হতে হবে। ছাত্ররা হোস্টেলে থাকলেও প্রয়োজনের বাইরে বিদ্যুৎটা বন্ধ করতে হবে। বিশ্ব মন্দা যেন আমাদেরকে আঘাত করতে না পারে। সে জন্য সবাইকে দৃষ্টিতে হবে। ৭৬ বছর বয়স যেকোনো দিন আক্কা পেতে পারি। জামাত শিবির যদি আবার দিন আলবাদের তারা যেন আর প্রেমিক না পারে সেই কাজটাই করে যেতে চাই। -ডেস্ক রিপোর্ট

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content