• Top News

    বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগ

      প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর ২০২২ , ১০:৩৮:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

    (দিনাজপুর২৪.কম) জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করছেন বিএনপির সাত এমপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ঘোষণা দিয়েছেন তারা। দলটির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার ই-মেইলে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর রবিবার সশরীরে সংসদে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হবে।

    গতকাল শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় গণসমাবেশে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। সাত এমপির পক্ষে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা তারেক রহমানকে সাক্ষী রেখে আপনাদের সামনে আমরা ঘোষণা দিচ্ছি বর্তমান জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান জাতীয় সংসদ হচ্ছে বন্দনার বাক্স। এই সংসদ হচ্ছে শেখ হাসিনার বন্দনার বাক্স।’ এর পরই তার বক্তব্য সমর্থন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বাকি এমপিরা। তবে হারুনুর রশিদ দেশের বাইরে থাকায় তিনি এ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না। টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক কারণে অস্ট্রেলিয়ায় আছি। দেশে থাকতেই আমি পদত্যাগপত্রে সই করে এসেছি।’

    পদত্যাগ করা সাত এমপি হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, বগুড়া-৬ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তার, বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান জাহিদ এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

    জানা গেছে, গত শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এমপিদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হয়। ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। নিয়মানুযায়ী, কোনো সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে তার আসনে উপনির্বাচন হবে। তার আগে স্পিকার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আসনটি শূন্য ঘোষণা করবেন।

    পদত্যাগকারী সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ই-মেইলে স্পিকারের কাছে আমরা সাতজনই আমাদের পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি। গতকাল সরকারি ছুটিতে অফিস বন্ধ। তাই রবিবার সরাসরি সেখানে গিয়ে হাতে হাতে পদত্যাগপত্র জমা দেব।’

    বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজ তো অফিস বন্ধ। বিএনপির সংসদ সদস্যদের কোনো চিঠি আমি পাইনি। আমার কাছে কোনো চিঠি আসেনি।’

    সংসদ সদস্যদের পদত্যাগপত্র গৃহীত না হলে আসন শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে সংসদের অনুমতি ছাড়া টানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিতির বিষয়টিও রয়েছে। সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদের (১) (খ) ধারায় এ বিধান বর্ণিত রয়েছে।

    জানা গেছে, ২০১২ সালে গাজীপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য তানজিম আহমদ সোহেল তাজের পদত্যাগপত্র নিয়েও জটিলতা হয়েছিল। পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় পরে সশরীরে তা স্পিকারের হাতে জমা দিয়েছিলেন তিনি।

    এ ছাড়া ১৯৯৪ সালে বিতর্কিত মাগুরা উপনির্বাচনের পর আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্যরা।

    কিন্তু তৎকালীন স্পিকার তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে অনুপস্থিত বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত দেন। ৯০ কার্যদিবস পূরণ হওয়ার পর ১৯৯৫ সালের ৩১ জুলাই সংসদীয় আসনগুলো শূন্য হয়।

    সংসদ সচিবালয় থেকে সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের বিধান রয়েছে। নির্বাচন কমিশন শূন্য আসনে ভোটগ্রহণের আয়োজন করবে।

    জাতীয় পার্টির এমপিদের পদত্যাগের আহ্বান

    জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, আমাদের সাতজন এমপি পদত্যাগ করেছেন। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের বলব আপনারাও পদত্যাগ করুন, পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে চলে আসুন। তিনি বলেন, ‘মাঠে যে লোক দেখেছেন তার বাইরে আরও ১০ গুণ মানুষ রাস্তায় রয়েছে। আমাদের এমপিরা তাদের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। আমি বলতে চাই এটি ১০ নম্বর সমাবেশ না, ১০ নম্বর সতর্কতা সংকেত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।’ -ডেস্ক রিপোর্ট

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content