প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২৩ , ৬:২১:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ (দিনাজপুর২৪.কম) কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তর জনপদের ঘোড়াঘাট উজেলার মানুষ ও পশুপাখি। গত শুক্রবার ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারী পর্যন্ত দিনভর উত্তর জনপদের জেলাগুলো সহ ঘোড়াঘাটে সূর্যের দেখা মেলেনি। সেই সঙ্গে বেড়েছে হিমেল হাওয়া ও শৈতপ্রবাহ। জানা যায়, বুধবার বিকাল থেকেই উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। সন্ধ্যা নামার পর প্রচ- শীত অনুভূত হতে থাকে। বাতাসের কারণে রাতে কুয়াশার পরিমাণ কম ছিল। তবে বৃহস্পতিবার ভোরে কুয়াশা বেড়ে যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরে। সকালে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও শীতল বাতাসের কারণে দিনভর রোদের উত্তাপ তেমন একটা অনুভূত হয়নি। গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র শীতে বৃদ্ধ ও শিশুরা কষ্ট পাচ্ছেন। ঘর থেকে বের হতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সূর্যের লুকোচুরি খেলা চললেও বেড়েছে হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উত্তরাঞ্চলে প্রতি শীত মৌসুমে সব সময় শীতের তীব্রতা একটু বেশিই থাকে। বৃহস্পতিবার ৪ জানুয়ারী কুয়াশায় ঢেকে যায় শহরগুলো ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ।
শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের কারণে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। ঘন কুয়াশায় দূরপাল্লার বাসসহ অন্যান্য যানবাহন দিনের বেলাও লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। যান চলাচলে কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে। ফলে দেরি করে ছাড়ছে এসব যানবাহন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে এ অঞ্চলের শ্রমজীবী খেটে খাওয়া ও দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোর। তবে শীত মোকাবিলায় দুর্গত মানুষের সহায়তার প্রস্তুতি নিয়েছে স্থাানীয় প্রশাসন। আসন্ন শীতে জেলার গরিবও দুস্থাদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ২ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। বরাদ্দকৃত এসব কম্বল ইতোমধ্যে ১টি পৌরসভা ও উপজেলার ৪টি উপজেলায় উপ-বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাাপনা শাখা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঘোড়াঘাট উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে কথা হয়, ভ্যান চালক আঃ সাত্তারের (৪১)বলেন, আমি রাতে ভ্যান চালাই‘আজ জার (শীত) খুব বেশি, জামাকাপড়ও নাই । তাও শীতের মদে কষ্ট করে ভ্যান চালাই,কুয়াশাতে আস্তা দেখা যায়না না।
ভ্যানচালক মোবারক আলী (৬৫) বলেন,গত কয়েক দিন থ্যাক্যা ঘন কুয়াশায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভ্যানের লাইট জ্বেলে চলাচল করছি। বিকাল ৪টার পর কুয়াশা নামা শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টা বাজলে লাইট জ্বালিয়েও কিছু দেখা যায় না।কুয়াশার সাথে ঠান্ডা বাড়তে থাকে ।
সকাল ১০টায় কথা হয়, ঘোড়াঘাট উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজার,ঘোড়াঘাট পৌর সদর হোটেল ব্যবসায়ীরা বলেন, ভোর ৬টা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরপুর থাকে, ঠা-া আর কুয়াশার জন্যে তাক দুপুর ১২টা পর্যন্ত লোক পাওয়া যায় না। মানুষ শীত কুয়াশায় বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। বিশেষ করে করতোয়া তীরবর্তী গ্রাম মল্লিকপুর, শালিকাদহ,কুলানন্দপুর,কৃঞ্চরামপুর,জয়রামপুর,ডাঙ্গা,মারুপাড়া,ভেলামারী,সাতপাড়া,গোবিন্দপুর,ভর্নাপাড়া,চাঁদপাড়া,গুয়াগাছী,কুমুরিয়া,রামনগর,লালমাটি,কাদিমনগর,ঘোড়াঘাট সদর,বালুসহ বিভিন্ন গ্রামের খেটে খাওয়া নি¯œ আয়ের পরিবারের মানুষরা শীতে বেশী কষ্ট পাচ্ছে । তারা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অত্যধিক কুয়াশা পড়ছে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে ঠা-া বেড়ে যাওয়ায় কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। অর্র্থের অভাবে শীতবস্ত্রও কিনতে পারছি না।
এমতাবস্থাায় চলতি মাসের শেষের কয়েকটি দিন ও বছরের শুরুতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। ঘন কুয়াশা ও শীতে জবুথবু করতোয়া পাড়ের ৬৩ মানুষ।
আবহাওয়া ্অফিস জানায়, উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আগের দিনের চেয়ে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি কমে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। আগামী মাসের শুরুর দিকে জেলার ওপর দিয়ে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।