প্রতিনিধি ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:১২:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) দেশে রাজনীতি বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মঈন বলেন, ‘দেশে রাজনীতি বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই। আমরা যারা বিএনপি করি তারা রাজনীতি বলতে বুঝি মানুষের কল্যাণ করা, তাদের সেবা দেওয়া, তাদের উন্নয়ন করা এবং সত্যিকার অর্থে জনগণের ভোট নিয়ে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে দেশকে পরিচালনা করা।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলায় ৩৫ লাখ আসামি উল্লেখ করে ড. মঈন বলেন, ‘দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা। এত কর্তৃত্ববাদী শাসন। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশের আগে ৩০ নভেম্বর থেকে ২৫ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়, এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাহলে কোথায় আছে রাজনীতি? রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। ’
সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের অবস্থা দেখুন, সরকার যেভাবে রায় লিখে দেয়, শুধু তা পাঠ করে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রশাসন তৈরি করা হয়, তাও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয় কে আওয়ামী লীগ করে। পুলিশ বিভাগকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তারা যত দুর্নীতি করুক সরকার তাদের রক্ষা করবে, সব কিছু মাফ। এ দেশ এখন পুলিশি রাষ্ট্র। নির্বাচন কমিশন, ভোটের ফলাফল আগের রাতেই লিখে সই করে দেয়। মিডিয়ার কি স্বাধীনতা আছে? দেশে এখন অঘোষিত বাকশাল চলছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে রাজনীতির রেশ বলতে কিছু নেই। ৭২‘ থেকে ৭৫‘ সালে লিখিত বাকশাল ছিল; এখন অলিখিত বাকশাল কায়েম করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ যা হুকুম করে তা জনগণকে মানতে বাধ্য করে। ক্ষমতাসীনদের অস্বাভাবিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। মানুষকে চিন্তার স্বাধীনতা দিতে হবে।’
রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই উল্লেখ করে ড. মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেষ কথা ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে কাপুরুষের মতো পালিয়ে গেলাম, আর মুখে স্বাধীনতার কথা বলব—এই ধোঁকাবাজির রাজনীতি চলবে না। সত্যিকার অর্থে যারা জীবনপণ করে মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল—আমাদের নেতা শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ক্ষান্ত হননি, তিনি সম্মুখ যুদ্ধ করেছেন এবং জয়লাভ করেছেন। তাকে বাংলাদেশের মানুষ বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করেছিল। সেই জিয়াউর রহমানের সৃষ্ট বিএনপির একজন সদস্য হিসেবে গর্ববোধ করি। আওয়ামী লীগ মুখে একটা বলে, করে আরেকটা। যেটা করে তা কোনোদিন বলে না। এই রাজনীতি দেশের মানুষ অতীতে প্রত্যাখান করেছে, এখন করছে আবার ভবিষ্যতেও প্রত্যাখ্যান করবে। এ দেশের মানুষ চায় সৎ রাজনীতি, তারা চায় গণতন্ত্র ফিরে আসুক, তারা তাদের অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। এসব ফিরে পেতে হলে প্রয়োজন সৎ রাজনীতি।’
জিয়া প্রজন্মদলের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শাহীনুর মল্লিক জীবন। সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রুবেলের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লাহ বুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।- ডেস্ক রিপোর্ট