প্রতিনিধি ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:৫০:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) সারাদেশে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি আয়। তাই পরিবার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে নি¤œ-মধ্যবিত্তদের কাটছাঁট করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, ব্যয় এতই বেড়েছে যে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে পঁয়াজে দাম কিছুটা কমলেও অস্থির ব্রয়লার ও ডিমের দাম পাশাপাশি বাড়তি দামে চাল, ডাল, চিনি, আদা, রসুন,ও মরিচের দাম। এদিকে শীতের মৌসুম শেষের দিকে শীতকালীন অনেক সবজিরই সরবরাহও কমেছে দামও বেড়েছে। এ বিষয়ে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির উৎপাদন অনেকটা কমেছে। ফলে বাজারে সবজির সরবরাহ ধীরে ধীরে কমে আসছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে শিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর বিচিসহ শিম ৬০ টাকা, প্রতি কেজি করোলা ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, নতুন আলু (লাল) প্রতি কেজি ৪০ টাকা, নতুন আলু (ডায়মন্ড) প্রতি কেজি ২৫ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং প্রতি পিস লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মতিজিল কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সুমন বলেন, শীতে সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সেই যে দাম বাড়ল, আর কমেনি। আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের বাড়তি দামেই সবজি কিনতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলেই বিক্রেতারা বলে সরবরাহ কম, বাড়তি দাম, পরিবহন খরচ বেড়েছে। তাদের একই রকমের অভিযোগ সব সময়। যেমন ইচ্ছে তেমনভাবে বাজারে দাম বেড়ে যায় কিন্তু বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ দেখি না।
এ বিষয়ে কলতা বাজারের সবজি বিক্রেতা সাদ্দাম বলেন, এখন মৌসুম না যেসব সবজির সেগুলোর দাম কিছুটা বেশি। কারণ এই সময়ে এসে ওইসব সবজির উৎপাদন বা সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়।
এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে দেড় থেকে দুই টাকা। মালিবাগ রেলগেট বাজারে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক কামাল বলেন, আগে গরিব মানুষ যা খেতো, সেগুলোর দাম বাড়তো কম। এখন সেগুলোর দামই তরতর করে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু মোটা চালের দাম দেড় থেকে দুই টাকা বেড়েছে। আগে যে পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৪ টাকা বিক্রি হতো তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা দরে। বাজারে অনেকের কাছে গুটি স্বর্ণা চাল নেই। মোটা জাতের ওই চালের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। এদিকে প্রায় মাসখানেক ধরে অস্থির ব্রয়লার ও ডিমের দাম বেড়ে যাচ্ছে দফায় দফায়। বর্তমানে ২৪০ টাকা কেজির এসব মুরগির দাম সপ্তাহ খানেক আগে ছিল ২২০ টাকা। আর এক মাস আগে বিক্রি হতো ১৬০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে ডিমের দাম মাসের ব্যবধানে হালিতে প্রায় ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। কলতাবাজারের মুরগি বিক্রয়তা জাকির হোসেন বলেন, তিনদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু শুক্র-শনি ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে বুধবার থেকে দাম বাড়ে। পাইকারি বাজারে আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। গত সোম-মঙ্গলবার ১০-২০ টাকা কমে ব্রয়লার বিক্রি করেছি। এদিকে বাজারে মৌসুমের শেষে শীতের সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আর গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি বাজারে এসেছে তাতে হাত দেওয়ার জো নেই। প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি হালি লেবু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা ও রসুন ১৬০-২২০ টাকা দরে।
লক্ষিবাজাওে পেঁয়াজ বিক্রেতা আলী বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করায় আমদানি ও দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগেও পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা ছিল। এখন ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৬০-১৮০ টাকা, রুই ২৫০ টাকা ৩৫০টাকা, পাঙাশ ১৪০-১৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০-১৬০ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৩০০-৪০০ টাকা এবং চিংড়ি মাছ ৬০০- ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশ মাছ কেজি বড় আকাড়ে ১৫০০ টাকা মাঝারি ১২০০ টাকা ছোট ৪০০-৬০০ টাকা। -নিউজ ডেস্ক