প্রতিনিধি ২ মার্চ ২০২৩ , ৪:১১:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দি রুহুল কবির রিজভীর প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেনর তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।
আরজুমান আরা বেগম বলেন, ‘রিজভী একজন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি। তাকে লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে হয়। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হলে অন্যের সাহায্য দরকার হয়। এমন একজন ব্যক্তিকে সেই কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে একইভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে অমানবিক, অসাংবিধানিক ও নিষ্ঠুর আচরণ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’
রিজভীর স্ত্রী বলেন, ‘সকালের দিকে একটি প্রিজনভ্যানে করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রিজভীকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম কোর্টে আনা হয়। আমি ঠিক জানি না প্রিজনভ্যানে বসার কোনো ব্যবস্থা থাকে কি না? তবে রিজভীর সঙ্গে কথা বলে জানলাম পুরো রাস্তায় তাকে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আদালতে রুহুল কবির রিজভীকে দেখার পর নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। তাকে চিনতে যেকারো কষ্ট হবে। রিজভী শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার শরীর ভালো নেই। তার অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা তার নিয়মিত খোঁজ-খবর পাই না। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি রিজভী কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।’
রিজভীর স্ত্রী বলেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রিজভীর সঙ্গে চিকিৎসককে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেদিন মামলার হাজিরার জন্য রিজভীকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিএমএম কোর্টে আনা হয়েছিল। সেদিন আদালতে আনার পর তাকে রাখা হয় হাজতখানায়।’
তিনি জানান, রিজভীর শারীরিক অসুস্থতা ও মামলা-সংক্রান্ত বিষয়ে স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের অনুমতি চান। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে সাক্ষাতের অনুমতি দেন। রিজভীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক রফিকুল ইসলামকেও সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়।
আরজুমান আরা বেগম বলেন, হাজতখানার ওসি রিজভীর সঙ্গে তার স্ত্রী ও ব্যক্তিগত চিকিৎসককে সাক্ষাৎ করতে দেননি। দুই ঘণ্টা কারাগারের হাজতখানায় রাখার পর সেদিন সাড়ে ১২টায় ফের রিজভীকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিজভীর স্ত্রী বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর মাঝেমধ্যে তার পেটে সমস্যা হতো। সেই থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানিও খান না।’
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই দিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। তথ্য সূত্র : আমাদের সময়