• Top News

    জেসমিনের সন্ধানে আগেও নওগাঁ গিয়েছিলেন এনামুল

      প্রতিনিধি ২ এপ্রিল ২০২৩ , ১১:৩৬:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    সুলতানা জেসমিন

    (দিনাজপুর২৪.কম) র‌্যাব হেফাজতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার মারা যায় নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিন (৩৮)। শনিবার ময়নাতদন্তের পর র‌্যাবের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের হাম্মামখানায় মরদেহের গোসল করায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কোয়ান্টামের রাজশাহীর একজন সংগঠক জানান, তাদের নারী স্বেচ্ছাসেবীরা জেসমিনের মরদেহের গোসল করান। পরে কাফনে মোড়ানো মরদেহ কফিনে করে বাড়ি পৌঁছে দেয় র‌্যাব। দাফনও হয়েছে র‌্যাবের পাহারায়।

    জেসমিনকে আটক ও মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধানে শুক্রবার নওগাঁ যান বিশিষ্ট গবেষক ও হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি মাহবুব সিদ্দিকী, রাবি শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, আইনজীবী হাসনাত বেগ প্রমুখ। নওগাঁ থেকে ফিরে শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এ সময় অধ্যাপক মাসউদ বলেন, জেসমিনের দাফন পর্যন্ত সবই হয়েছে র‌্যাবের উপস্থিতিতে। নিজ বাড়িতে তার মরদেহের গোসল দেওয়া হয়নি। র‌্যাব বলেছে, তারা গোসল সম্পন্ন করেছে। কফিন থেকে কাফন পরানো মরদেহ বের করে দাফন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা মরদেহের মুখ ছাড়া কিছুই দেখতে পারেননি।

    এ বক্তব্যের সত্যতা স্বীকার করে জেসমিনের মামা নাজমুল হক মন্টু জানান, যারা জেসমিনকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারা দাফন পর্যন্তও ছিল। আমরা কফিনের ভেতর লাশের কপাল থেকে শুধু মুখটাই দেখতে পেয়েছিলাম। মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, জেসমিনের মামা অনুসন্ধান দলকে বলেছেন, মামলা তো পরের কথা, আমরা কী অবস্থায় আছি তা আপনারা বুঝতে পারছেন না। কোনো চাপে আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, এটা কি বোঝাতে হবে! তার মামা পাঁচবার পৌরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। এলাকায় তিনি প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত। এখন জেসমিনের পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তারা আতঙ্কিত।

    অনুসন্ধান দলটি নওগাঁর মুক্তির মোড়ে গিয়ে জেসমিনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের বরাত দিয়ে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, সাদা পোশাকের লোকজন জেসমিনকে জোরপূর্বক তুলে নিয়েছিল। র‌্যাবের এই দলে কোনো নারী সদস্যকে প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখেননি। ধাক্কা দিয়ে তাকে মাইক্রোবাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ ছাড়া এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া ‘আটক’ নয়, এটিকে আমরা ‘অপহরণ’ হিসেবে মনে করছি। এটিও একটা অপরাধ। ঘটনার সময় যুগ্ম সচিব এনামুল হকও ছিলেন। জেরার মুখে তিনি স্থানীয় এক সাংবাদিককে জানান, তিনি নওগাঁ গিয়েছিলেন বিরিয়ানি খেতে। জেসমিনের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিঃসন্দেহে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। সংবাদ সম্মেলনে অনুসন্ধান দল জেসমিনকে আটক ও মৃত্যুর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে।

    জানা গেছে, তদন্ত কমিটি র‌্যাবের গাড়িতে করে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে। এ ছাড়া নওগাঁর মুক্তির মোড় থেকে জেসমিনকে গাড়িতে তোলার পর একটি কম্পিউটারের দোকানে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। সেখানে যুগ্ম সচিবের সরকারি গাড়িও দেখা গেছে।

    সূত্রটি আরও জানায়, যুগ্ম সচিব এনামুল ও জেসমিনের কললিস্ট যাচাই করছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। জেসমিনের সঙ্গে ভিন্ন নম্বর দিয়ে এনামুলের একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথোপকথন হয়েছে। এসব কথায় জেসমিনের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থা। -নিউজ ডেস্ক

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content