• Top News

    ফোনকল ৪১ লাখ ৬০ হাজার, লিপিবদ্ধ ১০ হাজারের কম

      প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২৩ , ৯:১০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    (দিনাজপুর২৪.কম) দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ফোনকলের মাধ্যমে জানাতে সাড়ে পাঁচ বছর আগে হটলাইন নম্বর চালু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ লাখ ৬০ হাজার কল এসেছে। এর মধ্যে নথিবদ্ধ হওয়া অভিযোগের সংখ্যা ১০ হাজারের কম।

    তবে অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কয়েক হাজার অভিযান চালিয়েছে দুদক। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে সরকারি দপ্তরে দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ৬৮টি চিঠি। আর ফোনকল থেকে পাওয়া অভিযোগ থেকে ৪৬০টি পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটি। দুদকের এক পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এই পরিসংখ্যানে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত হটলাইনে আসা অভিযোগের হিসাব করা হয়েছে।

    দুদকের সবশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে হটলাইনে ৬ হাজার ৭৮৬টি ফোনকল এসেছে। এসব কলের মধ্যে এখতিয়ারসম্পন্ন মাত্র ৩৩১টি অভিযোগ রেকর্ড করেছেন দুদকের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ৩১টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। আর ১৩টি অভিযোগের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। কমিশন দুর্নীতি দমনমূলক ও প্রতিরোধমূলক এ দুই ধরনের কাজ করে থাকে। প্রতিরোধমূলক কাজের অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই কমিশন অভিযোগ কেন্দ্র টোল ফ্রি হটলাইন নম্বর ১০৬ চালু করে। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দুদক।

    রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে স্থাপন করা হয় হটলাইন অভিযোগ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে এক সঙ্গে পাঁচজন কর্মকর্তা দুই ঘণ্টা পরপর পালা করে দায়িত্ব পালন করেন।

    সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত হটলাইনে অভিযোগ গ্রহণ করে দুদক।

    হটলাইন চালুর এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার ফোনকল আসে। তখন এই সেবা দেশ-বিদেশে বেশ আলোচিত হয়। প্রথম আড়াই বছরে ফোনকলের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪০ লাখ। পরবর্তী সময়ে হটলাইনে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার ফোনকল আসে।

    দুদক থেকে জানা যায়, গত সাড়ে পাঁচ বছরে হটলাইনে আসা ৪১ লাখ ৬০ হাজার ৪৫টি কলের বিপরীতে অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়েছে ৯ হাজার ১৯১টি। তবে হটলাইনের অভিযোগের সূত্র ধরে বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে প্রায় আড়াই হাজার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ৪ হাজার ৬৮টি অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

    দুদকের কর্মকর্তারা জানান, হটলাইন চালুর প্রথম দিকে যেসব ফোনকল এসেছে এর অধিকাংশই অভিযোগ ছিল তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত। জমিজমার বিরোধ, মারামারি, প্রতিবেশী ও পারিবারিক কলহ নিয়েও দুদকের হটলাইনে ফোন আসে। অকারণেও অনেকে ফোন দিয়েছে। পরে দুদকের এখতিয়ার সম্পর্কিত অভিযোগ নিয়ে প্রচার চালানোর পর এ ধরনের ফোনকল কমে যায়।

    কর্মকর্তারা জানান, হটলাইন চালু হওয়ার পর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ ফোনকল আসে। ২০২০ সালে আসে ৭৪ হাজার ৫০৬টি। আর ২০২১ সালে পাওয়া যায় ৩৯ হাজার ২৬৭টি। গত বছর হটলাইনে প্রায় ৪০ হাজার ফোনকল আসে।

    দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আমাদের সময়কে বলেন, হটলাইনে প্রতিদিন অসংখ্য ফোন আসে, বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করা হয়। দুদক আইন অনুযায়ী যেসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আছে, সেগুলো নথিভুক্ত করা হয়। এর পর কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে সেই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। তিনি জানান, হটলাইনে যেসব অভিযোগ আসে এর অধিকাংশই দুদকের এখতিয়ারের বাইরে, যে কারণে অভিযোগের একটি বড় অংশের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। সেগুলো রেকর্ডও হয় না।

    দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘কমিশনের কাছে যদি মনে হয় কোনো অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তখন কমিশনের সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযান চালানো হয়। বিশেষ করে সরকারি সেবা খাতসংশ্লিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।’ -ডেস্ক রিপোর্ট

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।