প্রতিনিধি ২১ মে ২০২৩ , ৮:৪৭:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডট কম) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন তিন শতাধিক চরমপন্থি। তারা দুই শতাধিক অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ সমর্পণ করেছেন।
রোববার র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের তত্ত্বাবধানে সিরাজগঞ্জে র্যাব-১২-এর কার্যালয়ে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও রাজবাড়ী জেলার এ চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ, জেলার সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, হাবিবে মিল্লাত, মো. আব্দুল আজিজ, তানভীর ইমাম, মেরিনা জাহান, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডলসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের পুনর্বাসনে সরকার আন্তরিক
সরকার আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের পুনর্বাসনের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের আইনগত সহযোগিতাসহ স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করার প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন আশির দশক থেকে এই এলাকার কয়েকটি জেলায় যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ থাকায় সর্বহারা ও চরমপন্থিরা ঘাঁটি তৈরি করে। পরে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ স্লোগানে সর্বহারা-চরমপন্থিরা আলোর পথে ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রী তখন যেমন সবাইকে পুনর্বাসন করেছিলেন, তেমনি আজকেও সহযোগিতার কথা বলেছেন।”
বিপথগামীদের ফেরাতে নানান পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের সুযোগ পর্যন্ত করে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছেন।’
আসাদুজ্জামান খাঁন অপরাধীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন আমরা দুর্গম এলাকায় বসে থাকব, অপরাধ করব আর আপনারা ধরতে পারবেন না, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।’
র্যাবের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘র্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে যাচ্ছে, আস্থা অর্জন করেছে। এ জন্যই চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণের জন্য র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। র্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি নানা মানবিক কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, “আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিকভাবে সচ্ছল করার জন্য বিভিন্ন কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার মাধ্যমে সমাজে স্বাভাবিক পেশায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে ‘উদয়ের পথে’ নামক পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশতাধিক সর্বহারা পরিবারের নারী সদস্যকে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার জন্য কার্যক্রম চলমান রেখেছে র্যাব। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় র্যাব আত্মসমর্পণকারী বিভিন্ন চরমপন্থি দলের নেতা ও সদস্যদের আর্থিক প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দিয়ে তাদের স্বাভাবিক পেশায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে।’
আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিরা যেন পুনরায় তাদের পুরোনো পেশায় ফিরে না যায় এবং নতুন করে কোনো অপরাধে না জড়ায়, সে ব্যাপারে তাদের ওপর র্যাবের নজরদারি অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, ‘এখনো যারা আত্মসমর্পণ না করে নিজেদের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছে, র্যাব তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে; তারা যেন অপরাধ জীবন ছেড়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।’ -নিউজ ডেস্ক