• Top News

    একনজরে সিরাজুল আলম খান

      প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২৩ , ৬:১৪:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

    সিরাজুল আলম খান

    (দিনাজপুর২৪.কম) বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সাবেক আলোচিত ছাত্রনেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান মারা গেছেন। আজ শুক্রবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

    সিরাজুল আলম খান ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার আলীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আলীপুর গ্রামে স্থানীয় স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করে চলে যান বাবার কর্মস্থল খুলনায়। ১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। তারপর ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৮ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। থাকতেন ফজলুল হক হলে।

    স্নাতক সম্পন্ন করার পর ‘কনভোকেশন মুভমেন্টে’ অংশগ্রহণ করার কারণে সিরাজুল আলম খানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। একই কারণে তাকে হল থেকেও বহিষ্কার করা হয়।  বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করায় তিনি আর স্নাতকোত্তর করতে পারেননি।

    সিরাজুল আলম খান ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় স্কুলের ছাত্র থাকাকালে প্রথম মিছিলে যান। পরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৩ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বিকশিত করে বাঙালিদের স্বাধীন জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৬২ সালে ছাত্রলীগের ভেতরে ‘নিউক্লিয়াস’ গড়ে ওঠে তিনিই ছিলেন সেটির মূল উদ্যোক্তা।

    মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এই ‘নিউক্লিয়াস’-এর মাধ্যমে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন সিরাজুল আলম খান। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন তিনি। ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন।

    সিরাজুল আলম খান ১৯৬৩-৬৪ এবং ১৯৬৪-৬৫ এই দুই বছর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২-৭১ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলন, ৬-দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার আন্দোলন, ১১-দফা আন্দোলন পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করে তার সৃষ্ট ‘নিউক্লিয়াস’।

    আন্দোলনের একপর্যায়ে গড়ে তোলা হয় ‘নিউক্লিয়াস’-এর রাজনৈতিক উইং বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) এবং সামরিক ইউনিট ‘জয় বাংলা বাহিনী’। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনের নেপথ্য কারিগর হিসেবে তাকে চিন্তা করা হয়।

    গণিতে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নিলেও দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজবিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা ছিল সিরাজুল আলম খানের। তিনি ১৯৯৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। যেখানে বছরখানেক অধ্যাপনা করেন।

    আর্থ-সামাজিক বিশেষণে সিরাজুল আলম খানের তাত্ত্বিক উদ্ভাবন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়। মার্কসীয় ‘দ্বন্দ্বমূলক বস্ত্তবাদ’- এর আলোকে বাংলাদেশের জনগণকে শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী হিসেবে বিভক্ত করে ‘রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক’ মডেল হাজির করেন সিরাজুল আলম খান। তিনি দেশে-বিদেশে ‘রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে পরিচিত। -ডেস্ক রিপোর্ট

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content