• Top News

    ইসি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন ‘ম্যানুপুলেট’ করার একটি মেশিন: রিজভী

      প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২৩ , ৪:০৬:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    সংবাদ সম্মেলন

    (দিনাজপুর২৪.কম) বর্তমানে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন ‘ম্যানুপুলেট’ করার একটি মেশিন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

    তিনি বলেন, ‘গতকাল বুধবার পুরো ভোট বাতিলের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস করেছে শেখ হাসিনার ভুয়া ভোটের এমপিরা। নিজের স্বাধীনতাকে বিক্রি করে দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন ‘ম্যানুপুলেট’ করার একটি মেশিন।’

    আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

    বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের কারণে চলমান নির্বাচন বাতিলের যে ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ছিল তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ‘যে কোনো ভোট কেন্দ্র বা, ক্ষেত্রমত, সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করিতে পারিবে’- সংশোধনীতে এই বিধানটিকে সুকৌশলে বাতিল করে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ (পোলিং) বাতিল করার মধ্যে কমিশনের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ফলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কমিশন কর্তৃক নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা থাকবে না।’
    রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘সংশোধনীতে ‘ইলেকশন’ শব্দকে ‘পোলিং’ শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনের একটি পর্যায় হল ‘পোলিং’। পোলিং অর্থ ভোটের দিন ভোট নেওয়ার সময়টুকু বোঝায়। আর ‘ইলেকশন’ অর্থ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ সময়। নতুন সংশোধনীতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর, কোনো আসনের পুরো ফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। কিন্তু পূর্বে গ্যাজেট প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী ফলাফল বাতিল স্থগিত করা যেত। সংশোধনীতে যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ফল বাতিল করে কেবলমাত্র ওইসব কেন্দ্রে নতুন করে নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।’

    তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া আগে মনোনয়নপত্র দাখিলের ন্যূনতম সাত দিন আগে ক্ষুদ্রঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধের বিধান থাকলেও এখন সরকারের দুর্নীতিবাজ লুটেরা ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত তা পরিশোধের বিধান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিঃশেষ করে দেওয়া হল।’

    নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সরকার আরও জোরালোভাবে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে গেল। এতে আবারও প্রমাণিত হলো শেখ হাসিনার অভিধানে সুষ্ঠু নির্বাচন নেই বলে উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী।

    চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনই হবে সংলাপ বা যেকোনো আলোচনার মূল ভিত্তি বা এজেন্ডা। কারণ এরা দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে নির্বিকার ও নিবিষ্টচিত্রে। সুতরাং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা সূর্য পূর্ব থেকে পশ্চিমে ওঠার শামিল।’

    গোটা প্রশাসনকে মুজিবকোটময় করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দলদাস আমলারা এখন আইনবিধি কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব-বাসাবাড়ীতে গোপন শলাপরামর্শ করছে। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব খাজা মিয়া আগামী নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে জনসভা করছেন। সেই সমাবেশে এই সচিব প্রতিপক্ষের হাত ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। অথচ তার চাকরির মেয়াদ আছে আরও এক বছর। গণপ্রতনিধিত্বি অধ্যাদশে অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা অবসর গ্রহণের পর ৩ বছর পার হওয়ার আগে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।’

    সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় (রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ) বলা হয়েছে ‘সরকারি র্কমচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবনে না অথবা বাংলাদশে বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারেন না।’ আবারও সেই কথাটি মনে পরছে হাই সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী।

    রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গত ১৯ মে থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২২৫টি মামলা দেওয়া হয়েছে। ১০ হাজার ১০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ -নিউজ ডেস্ক

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content