• Top News

    বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার নামে ‘বাকির পাহাড়’

      প্রতিনিধি ৩১ জুলাই ২০২৩ , ৯:০৭:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম তারেক নূর। ফাইল ছবি

    (দিনাজপুর২৪.কম) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম তারেক নূর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা থাকাকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কয়েক লাখ টাকা বাকি রেখেছেন। প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী সেই টাকার পরিমাণ ১৩ লাখ ৮১ হাজার।

    বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এম তারেক নূর ছাত্র উপদেষ্টা থাকার সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য তহবিল থেকে টাকা তুলে নিলেও অনেক প্রতিষ্ঠানে বকেয়া রেখেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত টাকা পরিশোধের জন্য ওই শিক্ষককে বলা হয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান এম তারেক নূর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই চলতি বছর ১৩ এপ্রিল অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদকে তার স্থলাভিষিক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করাসহ বিভিন্ন দিবসগুলো ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে পালিত হয়। এসব অনুষ্ঠানের বরাদ্দ বাবদ অর্থ এ দপ্তরের কর্মকর্তাকে অগ্রিম দেওয়া হয়। দায়িত্বে থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় দিবসসহ অন্য অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, আলোকসজ্জা ও খাবারের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করেন তারেক নূর। কিন্তু বরাদ্দ হওয়া টাকা তুলে নেওয়া হলেও পাওনাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করেননি তিনি। ফলে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে প্রায় লক্ষাধিক টাকা বকেয়া পড়েছে। এখন এই টাকার জন্য প্রতিনিয়ত প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছেন পাওনাদাররা।

    গত মে মাসে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এম তারেক নূরকে দ্রুত পাওনাদারদের টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ছাত্র উপদেষ্টা থাকাবস্থায় বিভিন্ন কাজে ৬৭ দফায় অগ্রিম ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৫০ টাকা গ্রহণ করেন এম তারেক নূর। কিন্তু মাত্র ৬ লাখ ১৬ হাজার ১৮৫ টাকার সমন্বয় করেছেন। বাকি ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭০ টাকা সমন্বয় করেননি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই টাকার সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বকালে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করেও পাওনা পরিশোধ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই অবিলম্বে এসব প্রতিষ্ঠানকে পাওনা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    পাওনাদার মঞ্জুরুল বলেন, ‘২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে ক্যাম্পাসজুড়ে আলোকসজ্জা বাবদ পাঁচ লাখ টাকার একটি চুক্তি হয়। প্রথমে ১ লাখ টাকা দিলে আলোকসজ্জার কাজ শুরু হয়। কথা ছিল অনুষ্ঠান শেষে বাকি টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু তিনি পরিশোধ করেছেন মাত্র ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বাকি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা প্রায় ২ বছর ধরে ঝুলে আছে। অথচ ঋণ করে আমি এই কাজ করেছি। সেই টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে এখন আমার ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।’

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ বলেন, ‘বকেয়া টাকার জন্য প্রতিনিয়ত পাওনাদাররা আসছেন। টাকা চেয়ে আবেদন করেছেন অনেকে। কিন্তু এই বিষয়ে তো আমার জানা না। কেননা এসব অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য আগেই বরাদ্দ দেওয়া হয়। ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে সেই বরাদ্দ দিয়ে অনুষ্ঠান পালিত হয়। সেই হিসেবে কোনো প্রতিষ্ঠানে বকেয়া পড়ার কথা নয়। তাই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে অবহিত করেছি।’

    এ বিষয়ে জানতে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরকে পাওয়া যায়নি।

    সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবগত হয়ে এ টাকার সমন্বয় করার কথা তাকে বলেছি। এটা না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ -সূত্র : আ. সময়

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content