প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২৩ , ৮:১২:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মাসউদ রানা (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধিনে রুদ্রাণী স্কুল এন্ড কলেজের বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থী মো. মেহেদুল ইসলাম সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপক্ষে করে চার্জার হুইল চেয়ার চালিয়ে ২০ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে সীমান্তঘেষা পল্লী থেকে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এইস.এস.সি পরীক্ষা দিতে এসে সবাইকে অবাক করে দিলেন। ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান ফটকে উঠতে হুইল চেয়ারের চাকা বিকল হয়ে যায়। এই বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী তখন সবার নজরে পড়ে। সহপাঠিদের সহযোগীতায় সে পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যায়। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রর বাহিরে প্রত্যক্ষদর্শী অভিভাবকরা বলতে লাগলেন, স্বচ্ছল পরিবারের সুস্থ-সবল ছেলেদের মাঝেই লেখা-পাড়ার বা জীবনগড়ার এমন আগ্রহ দেখতে পাওয়া যায় না। নেশা আর মোবাইল আসক্তিতে আমাদের সন্তানরা যখন হারিয়ে যাচ্ছে; তখন শারীরিক প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী সবার প্রেরণা।
জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মেহেদুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার ১ নং এলুয়াড়ী ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের দিনমজুর আফজাল হোসেনের প্রথম সন্তান। মেহেদুলের পিতা মো. আফজাল হোসেন বলেন, মেহেদুল জন্ম থেকেই বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত; সে দুই হাটু এবং হাতে ভরে দিয়ে চলা ফেরা করে। তার এক ভাই জগন্নাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপাড়া করে। বোনের বিয়ে হয়েছে। মেহেদুল ইসলাম বলেন, সরকার ও জনগণের সহযোগীতা পেলে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে সে দেশ ও জাতীর কল্যাণে আত্মনিয়োগ করবে। মেহেদুল ইসলামের কথা শুনে তার সহযোগীতায় এগিয়ে আসেন ক্যাবের সভাপতি, মানবাধিকারকর্মী মাসউদ রানা, উত্তর সুজাপুরের হৃদয় যুবসঙ্গ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল হোসেন, উপদেষ্টা আবুল কালাম আজাদ ও মো. হাসান আলী। ২০ আগস্ট পরীক্ষা শেষে সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবনে তার যাতায়াতের সুবিধার্থে রিজার্ভ অটোবাইক ভাড়ার জন্য এবং শিক্ষা উপকরণের জন্য আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করা হয়। যাতে দুর থেকে চার্জার হুইল চেয়ার চালিয়ে ঝুকি নিয়ে তাকে আসতে না হয়। জেলা ক্যাবের প্রচার সম্পাদক ও উপজেলা ক্যাবের সভাপতি মাসউদ রানা বলেন, বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত একজন পরিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষার সময় বৃদ্ধিসহ মেহেদুলের যা যা প্রাপ্যতা রয়েছে এখনো তা পাচ্ছে না। শিক্ষাবোর্ড সহ সংশ্লষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।