ঘোড়াঘাটে বিড়াল মারতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু

মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মুরগির খামারে বিড়াল তাড়ানোর জন্য পাতানো ফাঁদে বিদ্যুতিক শকে সালমান ফারসি (২৩) নামে এক যুবক মারা গেছেন। তার ডানে হাতে দুই আঙ্গুলের মাঝে বিদ্যুতের তারে জড়ানোর ক্ষত রয়েছে।
রবিবার (২৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়নের চৌরিগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সালমান ওই গ্রামের গোলাপ মিয়া ছেলে। সে ভাদুরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ঘোড়াঘাট সরকারী কলেজে ডিগ্রি প্রথম বর্ষে ভর্তির অপেক্ষমান তালিকায় ছিল। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে ছোট।
পরিবার ও গ্রামবাসী জানান, রবিবার সকালে নিজ বাড়ির সাথে লাগানো পোল্ট্রি মুরগির খামারে যান সালমান। এসময় খামারে বিড়ালের হাত থেকে রক্ষা পেতে খামারের চারপাশে ফাঁদ হিসেবে দিয়ে রাখা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে সংস্পর্শে এসে বিদ্যুতায়িত হয় সে। তখন খামারে সে একাই ছিলেন। কিছু সময় পর তার মা রান্নার চুলায় আগুনের ধরানোর জন্য দিয়াশলাই নিতে খামারে গেলে দেখতে পান খামারের বাহিরে এক পাশে সালমানের দেহ পড়ে আছে। পরে তার মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। তখন সে জ্ঞানহীন অবস্থায় ছিল। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খামারটি ঘুরে দেখা যায়, খামারের ভিতরে অর্ধেক অংশ জুড়ে পোল্ট্রি মুরগির বাচ্চা পালন করা হচ্ছে। পুরো খামারের চারপাশে মাটি থেকে দুই ফুট উচুতে বাহির দিক থেকে মোটা জিআই তার দিয়ে ঘেঁরা।
স্থানীয়রা জানান, ওই জিআই তারের সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সংযোগ দিয়ে বিড়াল তাড়ানোর ফাঁদ পেতে রাখত নিহত সালমান। বিড়াল মুরগির বাচ্চা শিকার করতে খামারে প্রবেশের চেষ্টা করলেই, বিদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে শক খেয়ে পালিয়ে যেত।
নিহত সালমানের মা সাহেরা খাতুন কান্না বিজরিত কন্ঠে বলেন, আমি সকালে গিয়ে দেখি আমার ছেলে খামারের পাশে পড়ে আছে। বুকে নিয়ে দেখি ছেলে আমার একেবারে নিস্তেজ। বিদ্যুতের শক আমার ছেলেকে কেড়ে নিল।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ফারজানা জাহান বলেন, সকালে ওই রোগীকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন বিদ্যুতিক শকে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছি। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।