• আন্তর্জাতিক

    সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যার হাত ধরে ছড়াচ্ছে ঘৃণা

      প্রতিনিধি ১১ ডিসেম্বর ২০২১ , ৬:৪১:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভ। ছবি : এএফপি

    (দিনাজপুর২৪.কম) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা ও ঘৃণার তীব্র নিন্দার পাশাপাশি স্বাধীনতার আকুতি জানালেন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী দুই সাংবাদিক। গতকাল শুক্রবার নরওয়ের অসলোয় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার গ্রহণ করেন দুই কৃতী সাংবাদিক ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা ও রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ। এ সময় তাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন তাঁদের নিপীড়িত, নির্বাসিত ও নিহত সহকর্মীদের।

    মারিয়া রেসা তাঁর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিষের বন্যা’ বইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈশ্বিক তথ্যব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী আমেরিকান কম্পানিগুলো বস্তুনিষ্ঠতার বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট। তাদের কাঠামোটাই এমন যে তারা আমাদের বিভক্ত করছে এবং মৌলবাদী করে তুলছে।’

    ফেসবুক সম্পর্কে মারিয়ার মন্তব্য, ‘ফেসবুক বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংবাদ বিতরণকারী। তার পরও গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সত্য ছড়ানোর পরিবর্তে মিথ্যার হাত ধরে দ্রুত বেশি করে ছড়িয়ে পড়ছে ক্রোধ আর ঘৃণা।’ পরিবর্তনকামী এই নারী সাংবাদিক বলেন, ‘সেই ঘৃণা আর সহিসংতা, সেই বিষ, যা আমাদের মধ্যে ঢুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, আমাদের ভয়, ক্রোধ আর ঘৃণাকে ভেতর থেকে তুলে আনছে আর বিশ্বজুড়ে স্বৈরাচারীদের উত্থান ত্বরান্বিত করছে। এসব বিষাক্ত উপাদানকে পাল্টে দেওয়াটাই আজ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।’

    মারিয়ার সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার ভাগ করে নেওয়া রুশ সাংবাদিক সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত দিমিত্রি মুরাতভ জানিয়েছেন এক বিশেষ আকুতি, তবে তা নিজের জন্য নয়, বরং বিশ্বের সব সংবাদকর্মীর জন্যই। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সব সময় প্রাণনাশের হুমকির মুখে থাকা সতীর্থদের জন্য তাঁর চাওয়া পরমায়ু। ‘আমি চাই সাংবাদিকরা বৃদ্ধ বয়সে গিয়ে মৃত্যুবরণ করুন,’ এই ছিল তাঁর বক্তব্যের সমাপ্তি। এর আগে অন্যান্য সাংবাদিকের পরিস্থিতি তুলে ধরে অনেক কথাই বলেন মুরাতভ। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সাংবাদিকতা অন্ধকার সময় পার করছে।’

    মারিয়ার মতো প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক তুলে ধরেন মুরাতভও। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার ও স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে নয়, প্রযুক্তি আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব, এমন বিভ্রমে পড়ে আছি আমরা। স্বাধীনতা বিনা উন্নতি? এটা অসম্ভব।’

    মুরাতভের ভাষ্য, কারা সংঘাত সৃষ্টি করছে, কাদের কোন কর্মকাণ্ড নিরীহ মানুষকে শরণার্থী হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সেসব বাস্তবতা সাংবাদিকরাই সামনে এনেছেন। ‘আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন বাকি দায়িত্ব রাজনীতিকদের’, বলেন তিনি। রুশ এ সাংবাদিক আরো বলেন, ‘জনগণের জন্য রাষ্ট্র, নাকি রাষ্ট্রের জন্য জনগণ—আজ এটাই সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব।’ সূত্র : নোবেলপ্রাইজ ডটঅরগ।

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content