• সারাদেশ

    ‘ব্যাবাক্কে তো লাশ পায়, মুই তো কিছুই পাই নাই’

      প্রতিনিধি ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ , ৭:২২:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

    (দিনাজপুর২৪.কম) মোর বুকের মানিক আরিফ বাজান গেল কই। বাজান কি বাইচ্চা আছে। নাতনি কুলসুম গেল কই। ও আল্লাহ মোরে লইয়া গেলা না ক্যা। মোর বাইচ্চা থাইক্কা কি অইবো। ‘ এমন আহাজারিতে শোকের মাতম বইছে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত আরিফুর রহমানের (৩৫) বাড়িতে। পুরো এলাকা জুড়েই বিরাজ করছে শোকের ছায়া।

    আরিফ বরগুনার বেতাগীর মোকামিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লতিফ মৃধার ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে আরিফই সবার বড়। আরিফ তার চার বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে সোমবার ঢাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। বোনের বাসা থেকে গত বৃহস্পতিবার  বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আর বাড়ি ফেরা হলোনা আরিফুর রহমান ও তার চার বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমের।

    আরিফ গ্রামের বাড়িতে কৃষি কাজ করেন। তার স্ত্রী খাদিজা বেগম। আরিফ ও খাদিজা দম্পতির ৮ ও ৪ বছর বয়সী দুই মেয়ে ও এগারো মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে।  নিহত কুলসুম ছিলো তাদের দ্বিতীয় সন্তান।

    আরিফের মা আলেয়া বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমি আমার ছেলে ও নাতনিকে ফেরত চাই, ব্যাবাক্কে তো লাশ পায়, মুই তো কিছুই পাই নাই। মোর বুকের ধন আরিফ বাজান ও নাতনি কুলসুম কি বাইচ্চা আছে, না অর্ধ পোড়া অবস্থায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আর উঠতে পারেনি। না সবকিছু পুইড়া ছাই অইলো।’

    আরিফের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, ‘আমি জিগাইলাম না বইলা লঞ্চে উঠছো ক্যা? আমারে ফোনে কইলো বাড়িতে একটু কাজ আছে, কী কাজ তা কইলো না, কইলো তুমি বুঝবা না; পরে আর তার ফোনে কল গেল না।’

    আরিফ তার মেয়ে  কুলসুমকে নিয়ে অভিযান-১০ লঞ্চে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে লঞ্চের অগ্নিকান্ডের দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তাদের। তবে এখন পর্যন্ত আরিফুর রহমান ও তার মেয়ে কুলসুমের কোন সন্ধান পায়নি পরিবার।-অনলাইন ডেস্ক

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content