(দিনাজপুর২৪.কম) আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম হানাফি বলেছেন, তার দেশের মাটি কোনো দেশের জন্যই হুমকি হবে না। তিনি রাজধানী কাবুলে কাজাখস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বাখাইত সালতানোভের নেতৃত্বে সেদেশের একটি প্রতিনিধি দলকে দেয়া সাক্ষাতে এ কথা বলেছেন।
তিনি আরো বলেছেন, তালেবান এ অঞ্চলের প্রতিবেশী সব দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী এবং অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে হুমকি কিংবা আগ্রাসনে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহারের সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না। এ সাক্ষাতে তালেবান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম হানাফি ও কাজাখস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বাখাইত সালতানোভ দুদেশের মধ্যে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক বিস্তারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অন্য দেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার হবে না বলে আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট যে বক্তব্য দিয়েছেন তার উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর আস্থা অর্জন করা এবং দ্বিপক্ষীয় কিংবা বহুপক্ষীয় সহযোগিতা গড়ে তোলা। তালেবান গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর তাদের নিয়ন্ত্রিত সেদেশের ভবিষ্যত সরকারের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড অনাস্থার সম্মুখীন হয়েছে। এ কারণে তালেবান এখন আন্তর্জাতিক সমাজের আস্থা অর্জনের জন্য নানাবিধ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে, তালেবানের মুখের কথায় কোনো দেশ আস্থা রাখতে পারছে না। তাই আস্থা অর্জনের জন্য তালেবানকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি বাস্তাবায়ন করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সবচেয়ে বড় দাবি হচ্ছে আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় সেদেশের সব ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি অংশগ্রহনমূলক সরকার গঠন করা। কিন্তু তালেবান প্রায় পাঁচ মাস হলো ক্ষমতায় আসার পরও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আর এটাই আশেপাশের সব দেশের চিন্তা ও সন্দেহের মূল কারণ এবং এ কারণেই এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। যদিও তালেবান সম্প্রতি দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সমাজের স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। এ অবস্থায় তালেবান অন্য দেশের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সেটাই এখন প্রশ্ন।
বাস্তবতা হচ্ছে, তালেবান এখনো দেশ পরিচালনায় তাদের একান্ত নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও বিশ্বাস নিয়ে কাজ করছে এবং অন্য ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর ইচ্ছা অনিচ্ছা বা আবেদনের কোনো মূল্য তাদের কাছে নেই। এরই মধ্যে তারা প্রচার মাধ্যম ও জনগণের ওপর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা চাপিয়ে দিয়েছে বলে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে।
সম্প্রতি ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফোরামে অনুষ্ঠিত অন্যান্য বৈঠকেও একই দাবি জানানো হয়েছে। তাই এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে তালেবানের কর্মকাণ্ডের ওপর।-অনলাইন ডেস্ক
সূত্র: পার্সটুডে