• সারাদেশ

    পরীক্ষাই মেধা যাচাইয়ের একমাত্র সূচক নয়

      প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ , ৪:০৪:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

    রাশেদা কে. চৌধূরী।

    (দিনাজপুর২৪.কম) প্রথমেই সাধুবাদ জানাই, পরীক্ষাটা নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পাবলিক পরীক্ষা হয়নি। কিন্তু এই পরীক্ষা নেওয়ার ফলে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উৎকণ্ঠার অবসান হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প ছিল কি না আমার জানা নেই। তবে প্রায় সবাই তো গড়ে পাস করল। বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার পরও বলব, এখন যেটা হয়েছে, সেটি অটো পাসের চেয়ে ভালো।

    তবে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একটা প্রত্যাশার জায়গা তৈরি হয়েছে। সবাই ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাইবে, কিন্তু সবার তো নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থান সংকুলান হবে না। এটাও ঠিক, অসংখ্য কলেজ আছে, যেখানে আসন আছে। আমাদের জানা মতে এসব কলেজে শিক্ষক সংকট যেমন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও কম। এসব বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলে থাকেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় যাওয়ার জন্য। এসব দিকেও শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার দরকার আছে।

    অনেক শিক্ষার্থী, এমনকি মা-বাবাও মন খারাপ করবেন, পেলাম তো জিপিএ ৫; কিন্তু ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়ও আমরা দেখেছি, ভর্তি হতে ইচ্ছুকদের ৯৩ শতাংশই ভর্তি হতে পারেনি। কাজেই এসব বাস্তবতাকে মাথায় নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।

    মেয়েরা এবারও ভালো ফল করেছে। কারণ মেয়েরা পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকে অনেক বেশি। সুযোগ পেলে যে মেয়েরা অনেক ভালো করতে পারে, সেটি তারা বারবারই দেখিয়েছে। ক্রিকেট মাঠসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের মেয়েদের অর্জন কম নয়।

    একটা কথা আমি জোর দিয়ে বলব। শিক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের যে চাপ যাচ্ছে, তাতে নতুন বছরে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পরীক্ষাই কিন্তু মেধা যাচাইয়ের একমাত্র সূচক নয়। মেধার সঙ্গে দরকার নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সমন্বয়, কিন্তু সেটা আমরা দেখতে পারছি না। কাজেই হাজার হাজার পাস করল, তাতে উল্লসিত হওয়ার বা আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো উপায় নেই।

    বিশেষ করে বেসরকারি পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। এদের অনেকেই ইচ্ছামতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। অনেকের বিরুদ্ধেই নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তাদের নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে আনতে জাতীয় শিক্ষানীতিতে নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে একটা আইনি কাঠামো করতে হবে, কিন্তু আমরা এখনো সমন্বিত শিক্ষা আইন করতে পারিনি। আইন হলেও বাস্তবায়ন যথাযথভাবে করতে হবে। আর উচ্চ বিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয়গুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হলে আমাদের বিনিয়োগটাও বাড়াতে হবে।-অনলাইন ডেস্ক

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content