• জাতীয়

    ২০২১ সালে যাঁদের হারালাম

      প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ , ৪:০৯:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

    (দিনাজপুর২৪.কম) চলে যাচ্ছে আরেকটি বছর। ক্যালেন্ডারের পাতায় ২০২১ সালের শেষ দিন আজ। বছরজুড়ে দীর্ঘ হয়েছে মৃত্যুর মিছিল। জাতি হারিয়েছে বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেক প্রিয় ব্যক্তিত্বকে।

    চলতি বছর চিরপ্রস্থানে যাওয়া এই বিশিষ্টজনরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে চিরস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। প্রতিটি মৃত্যুই অপ্রত্যাশিত, বিয়োগান্ত। তবে এ বছর বিয়োগান্ত এই তালিকা আরো বেশি দীর্ঘ হওয়ার বড় একটি কারণ ছিল করোনা মহামারি।

    স্মরণীয় ব্যক্তিদের মধ্যে বিদায়ি বছরে প্রথম মৃত্যু হয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি, নারী নেত্রী আয়েশা খানমের। তিনি বছরের শুরুতে ২ জানুয়ারি মারা যান। তিনি বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সব প্রগতিশীল আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। চলে যাওয়ার তালিকায় আছেন খ্যাতিমান ব্যাংকার খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।

    রাবেয়া খাতুন : কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন গত ৩ জানুয়ারি মারা যান। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন।

    রাবেয়া খাতুনের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘মেঘের পরে মেঘ’ জনপ্রিয় একটি চলচ্চিত্র। তিনি যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতায়ও।

    লেখকদের মধ্যে আরো চলে গেছেন লেখক মুশতাক আহমেদ, বুলবুল চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক বশীর আলেহলাল, শেখ আব্দুল হাকিম, শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী এবং পশ্চিমবঙ্গের কবি ও সাহিত্য সমালোচক শঙ্খ ঘোষ।

    এ টি এম শামসুজ্জামান : একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান ২০ ফেব্রুয়ারি ৮০ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর আসল নাম আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। অভিনয়ের জন্য বেশ কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

    গত ১৭ এপ্রিল মারা যান সারাহ বেগম কবরী। চট্টগ্রামের মেয়ে কবরীর পারিবারিক নাম মিনা পাল। চলে যাওয়ার তালিকায় আরো আছেন অভিনেতা ওয়াসিম, অভিনেতা ও নাট্যকার ড. ইনামুল হক ও অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু।

    রফিকুল ইসলাম : ভাষাসংগ্রামী জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম গত ৩০ নভেম্বর মারা যান। ২০১৮ সালে তিনি জাতীয় অধ্যাপক হন। শিক্ষা, সাহিত্য ও গবেষণায় অবদানের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক পেয়েছেন। পৃথিবী ছেড়ে গেছেন স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকজয়ী আরেক প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক।

    এ ছাড়া বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, সাবেক পরিচালক ও সাংবাদিক ফরহাদ খান মারা গেছেন।

    রিয়াজউদ্দিন আহমেদ : একুশে পদকপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন ২৫ ডিসেম্বর। সাংবাদিকতায় গৌরবময় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। তিনি চারবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন।

    গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চলে গেছেন লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধের জন্য সুপরিচিত। ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।

    এ ছাড়া জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান, শাহীন রেজা নূর, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ব্রিটিশ সাংবাদিক সাইমন ড্রিং রয়েছেন না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায়।

    মিতা হক : গত ১১ এপ্রিল মারা যান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক। তিনি প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন গুণী এই শিল্পী।

    এইচ টি ইমাম : গত ৪ মার্চ মারা যান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হোসেন তৌফিক ইমাম (এইচ টি ইমাম)। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

    মওদুদ আহমদ : গত ১৬ মার্চ মারা যান বাংলাদেশের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। তিনি ছিলেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। পেশায় ছিলেন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ।

    এ ছাড়া রাজনীতিকদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, ফেনীর আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল হাজারী মারা যান।

    ফজল-এ-খোদা : গত ৪ জুলাই ভোরে মারা যান ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানের গীতিকার ফজল-এ-খোদা। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের তালিকায় ১২তম স্থানে রয়েছে তাঁর লেখা এই গানটি।

    ফকির আলমগীর : গত ২৩ জুলাই মারা যান বাংলাদেশের প্রখ্যাত গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।

    আমরা হারিয়েছি পপসংগীত শিল্পী জানে আলম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশীকে।

    এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শিল্পপতি দ্বীন মোহাম্মদ, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইউপিএলের প্রতিষ্ঠাতা মহিউদ্দিন আহমেদ, শিল্পগোষ্ঠী আনোয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার হোসেন দুনিয়া ছেড়ে গেছেন এ বছর।-অনলাইন ডেস্ক

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content