প্রতিনিধি ২৭ জানুয়ারি ২০২২ , ১২:৪২:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে ‘গেস্টরুমে’ নির্যাতনের শিকার হয়ে জ্ঞান হারিয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১সেশনের শিক্ষার্থী আখতার হোসেন। বুধবার দিবাগত রাত ১০টায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ১০টায় ছাত্রলীগের গেস্টরুম ছিল। অন্যরা গেস্টরুমে আসলেও আখতার অসুস্থ থাকায় গেস্টরুমে আসেনি। তার ইমিডিয়েট সিনিয়ররা তাকে ডেকে গেস্টরুমে না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি তার অসুস্থতার কথা জানান।
উত্তরে অভিযুক্তরা তাকে বলেন, কিসের অসুস্থ তুই? তোকে বিকেলে কলা ভবনের সামনে দেখলাম! কথা বলার সময় তার হুডির টুপি মাথায় থাকলে, তাকে গালি দিয়ে বলে ‘তুই গেস্টরুমের কালচার জানস না! তুই জ্বলন্ত লাইটের দিকে আধা ঘণ্টা তাকিয়ে থাকবি’।
১০ মিনিট তাকিয়ে থাকার পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ব্যাচমেটের সাহায্যে গণরুমে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে আখতার অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তার ইসিজি, কভিড টেস্ট ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হলে পাঠিয়েছেন।
আখতার জানান, তার বাবা সাত দিন আগে স্ট্রোক করেছে এবং ছোট ভাই দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। যার কারণে সে আগে থেকেই মানসিক ট্রমার ভেতরে ছিলেন।
এ বিষয়ে আখতার হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, এ ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কামরুজ্জামান রাজু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাইফুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাইফুল ইসলাম রোহান, ইতিহাস বিভাগের হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণ বিভাগের ইয়ামিন ইসলাম, সাইকোলজি বিভাগের ওমর ফারুক শুভ।
তারা সকলেই ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। জানা যায়, অভিযুক্তরা হল ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী আবু ইউনুস ও রবিউল ইসলাম রানার অনুসারী।
এ বিষয়ে আবু ইউনুস বলেন, তারা যে গেস্টরুম নিচ্ছে সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। হল প্রশাসনের প্রতি উদার্ত আহ্বান থাকবে যে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
বরিউল ইসলাম রানা বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার।
হল প্রভোস্টকে জানালে তিনি নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী আখতারের সাথে দেখা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন। হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। সেই আলোকে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। – অনলাইন ডেস্ক