প্রতিনিধি ২৭ জানুয়ারি ২০২২ , ৪:২৮:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া, সাহেব নগর ও আশপাশের প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রমত্তা পদ্মার পাড় তীব্র ভাঙনে ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি।
ঘরবাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা অবকাঠামো এবং উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক পথ কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মা নদীর বাম তীরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রক্ষায় নদীর আড়াইশ মিটার ভেতরে এসে গ্রোয়েন করার কারণে নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে ডান তীরে ভাঙন সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে যুক্ত আছে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে নদী থেকে বালি উত্তোলনের ঘটনা।
শুষ্ক মৌসুমে নদী ভাঙনের এমন ভয়াবহ রূপ এর আগে কখনো দেখেননি বলে দাবি স্থানীয়দের।
পদ্মা পাড় ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ।
মিরপুর উপজেলার সাহব নগর গ্রামের সরিজান নেছা (৭৮) বলেন, ‘বাবারে, এর আগে আরও তিনবার গাঙ্গের ভাঙনে ঘরবাড়ি হারায়ে এই গ্রামে আইসি আমার শ^শুড় বসা দিয়ে গেছে। আর কয়দিনি বা বাঁচপো মরার আগে এই বাড়িডাও মনে হচ্ছে আর থাকপিনা। সরকার যেদি এই ভাঙ্গন ঠেকানির কাজ করি দিতি তালি আর ভাঙ্গবি না।’
স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেহেদী হাসানের অভিযোগ, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতিরক্ষায় পদ্মা নদীর ভেতরে ৩শ মিটার ঢুকে এসে বাঁধ তৈরি করেছে। গত বছর থেকেই নদীর পানি বহলবাড়ি খাদিমপুর সাহেব নগর এলাকার উপর চাপ সৃষ্টি করে। তখনই আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য নেতাদের বলেছি, কিন্তু কোনো কাজ না করার কারণে গত ৭ দিনের মধ্যে পাড় ভেঙে প্রায় সাড়ে ৭শ একর ফসলি জমি নদীতে ভেঙে তলিয়ে গেল।
কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী একমাত্র মহাসড়কটি পদ্মার পাড় ভাঙনের কারণে চরম ঝুঁকির মধ্যে আছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি স্থানে নদীর পাড় থেকে মাত্র ১৫০ থেকে ২০০মিটার দূরত্বের মধ্যে চলে এসেছে। যা দুই বছর আগেও অন্তত ২ কি.মি. দূরত্বে ছিল। বিষয়টি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে পত্র প্রেরণ করেছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন কুষ্টিয়া তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ জানান, পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা ডিপিপি প্রেরণ করেছে। সেটা প্রি-এ্যাকনেক থেকে আবার সম্ভাব্যতা যাচায়ের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে অন্তত জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলানোর উদ্যোগ এখন প্রক্রিয়াধীন। -অনলাইন ডেস্ক