প্রতিনিধি ২৯ মার্চ ২০২২ , ৯:১১:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
বি. এম. জুলফিকার রায়হান (দিনাজপুর২৪.কম) গরুর নকল দুধ তৈরির উপাদান ভারতীয় নিম্ন মানের গ্লুকোজ পাওডার সহ তালায় নকল দুধ তৈরি চক্রের সদস্য বিকাশ ঘোষ (৪০)কে পুলিশ আটক করেছে। রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তালার জাতপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ তাকে আটক করে। এসময় তার কাছ থেকে ৪ বস্তা গ্লুকোজ পাওডার ও সয়াবিন তৈল উদ্ধার হয়। ধৃত বিকাশ পাশ্ববর্তী জেয়ালা গ্রামের মৃত. খগেন্দ্র নাথ ঘোষের ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে গরুর নকল দুধ তৈরি করে তরল দুধের সাথে মিশিয়ে বিভিন্ন দুধ কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে আসছিল।
জাতপুর পুলিশ ক্যাম্পের আইসি এস.আই ওহিদুর রহমান জানান, বিকাশ ঘোষ সহ জেয়ালা গ্রামের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় নি¤œ মানের গুড়ো দুধ, গ্লুকোজ পাওডার ও সয়াবিন তৈল দিয়ে নকল দুধ তৈরি করে আসছিল। রোববার রাতে বিকাশ ঘোষ ৪বস্থা গ্লুকোজ পাওডার ও সয়াবিন তৈল নিয়ে যাবার সময় জনগনের সহায়তায় তাকে জাতপুর বাজার থেকে আটক করা হয়। পরে, ওই রাতেই ধৃত বিকাশকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস’র ভ্রাম্যমান আদালত দুগ্ধজাত পন্যে ভেজাল মেশানো সহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪২ ও ৪৩ ধারা লংঘন করার অপরাধে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া উদ্ধার হওয়া ৪ বস্তা ভেজাল গ্লুকোজ বাজেয়াপ্ত করেন।
উল্লেখ্য, দুগ্ধ পল্লীখ্যাত তালার জেয়ালা গ্রামে একটি বড় চক্র দীর্ঘ বছর ধরে ভারতীয় নি¤œ মানের গুড়ো দুধ, গ্লুকোজ পাওডার ও সয়াবিন তৈল দিয়ে নকল তরল দুধ তৈরি করে আসছে। পরে সেই দুধ গরুর তরল দুধের সাথে মিশিয়ে তার নামী-দামি কয়েকটি দুধ কোম্পানির কাছে সরবারহ করছে। দুধ কোম্পানীগুলোর স্থানীয় প্রতিনিধি বা কর্মচারীরা বিষয়টি জানলেও তারা অবৈধ সুবিধা নিয়ে এই ভেজাল দুধ সংগ্রহ করে ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে সরবারহ করছে। এই দুধ পান করে শিশু, বয়স্ক এবং কিডনি, হার্ট ও ডায়াবেটিকস রোগীরা অধিকতর অসুস্থ হচ্ছে। তালায় ভেজাল ও নকল দুধ তৈরির বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপের কারনে এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন হয়নি।
তালার শিরাশুনি গ্রামে একটি পরিবারের অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ট!
তালা উপজেলার শিরাশুনী গ্রামেন আব্দুল আজিজ সহ তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারে গ্রামের সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একাধিক মামলা, জিডি ও অভিযোগের আসামী আজিজ এবং তার ছেলেদের একের পর এক হামলা, মামলা, হুমকি ও হয়রানীর মূখে গ্রামের মানুষ আতংকিত জীবন যাপন করছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মার্চ রাতে শিরাশুনী গ্রামের মো. সাজ্জাত মোল্ল্যার পুত্র মো. শহিদুজ্জামান সোহাগ (২০) সেতু বাজার হতে বাড়ী যাচ্ছিল। এসময় ওৎপেতে থাকা একই গ্রামের মৃত. তছির উদ্দীন মোড়লের পুত্র মো. আজিজ মোড়ল এবং তার ২ পুত্র মো. আমিনুর ইসলাম (আমিন) ও মো. মোমিনুর রহমান পরিকল্পিত ভাবে সোহাগের উপর হামলা করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। দূর্বৃত্ত আব্দুল আজিজ মোড়ল ও তার ছেলেদের হামলায় গুরুতর আহত মো. শহিদুজ্জামান সোহাগকে এলাকার মানুষ উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এঘটনায় ভুক্তভোগীরা আজিজ সহ তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তালা থানায় এজাহার দায়ের করে।
এছাড়া, আজিজ মোড়লের আপন দু’ ভাই মো. মজিদ মোড়ল ও মৃত. আঃ লতিফ এর ছেলেরা সহ ভাগ্নে মো. নুরুল ইসলাম মোড়ল ও আব্দুর রাজ্জাক এবং একই গ্রামের নিছার আলী এর ছেলে মো. আল আমিন তাদের অথ্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা থানা পুলিশ সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দায়ের করে।
আজিজ মোড়লের ছেলে মোমিন মোড়ল ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে আটক হয়।
আজিজ এর হুমকির কাররে শিরাশুনী গ্রামের মৃত কওছার আলী মোড়লের ছেলে মো. নুরুল ইসলাম সহ অনেকেই তার বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে পারেনা। এবিষয়ে নুরুল ইসলাম তালা থানায় একটি জিডি (১০৪৫, তারিখ: ২৫/০৩/২০২২) করেছেন।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, আজিজ সহ তার দু’ ছেলের নামে পৃথক পৃথক একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। তাদের অত্যাচার ও হুমকির কারনে এলাকার মানুষ সবসময় আতংকিত থাকে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এলাকার মানুষ উর্দ্ধতর পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন।