প্রতিনিধি ২০ মে ২০২২ , ২:৩৩:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরামপুরে নির্মাণের তিন মাসের মধ্যেই উল্টে গেছে ৩৩ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নির্মামাণাধীন সেতু। গত তিন বছরে প্রশাসন থেকে একাধিকবার ঘটনাস্থলে পরির্দশন, প্রশাসন ও দুদুক থেকে তদন্তের কথা বলা হলেও গ্রামের মানুষের ভোগান্তির সমাধান হয়নি। মেলেনি প্রতিকার। ফলে নিজেরা অর্থ সংগ্রহ করে ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে মানুষ।
জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরামপুর গ্রামে স্থানীয় সব বয়সী মানুষ দড়ি দিয়ে ড্রামের ভেলা টেনে খাল পারাপার করছে। এখন পানি কম থাকায় পারাপারে সমস্যা কম হলেও বর্ষা মৌসুমে ভীষণ ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। খালে প্রচন্ড স্রোত থাকায় ড্রামের ভেলা ভেসে যাওয়ার মত অবস্থা হয়। তখন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করতে হয়। অনেক সময় পানিতে পরে যায় তারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষিকাজে জড়িত মানুষ এবং গুরুতর রোগীদের এসময় ভীষণ সমস্যায় পরতে হয়। নির্মাণের তিন মাসের মধ্যেই সেতুটি ডেবে যাওয়ায় এর সুফল থেকে বঞ্চিত হয় গ্রামবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে খালের ওপর দিয়ে আবাসনে যাওয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৬ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ৪০ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি। ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাজটির তদারকি করেন। সেতুটি নির্মাণ করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটিএম দেলোয়ার হোসেন টিটু। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে সেতুটি দেবে গিয়ে উল্টে যায়। পরে বন্যার পানির চাপে সেতুর সংযোগ সড়কও বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। ফলে স্বপ্নের সেতুর এমন পরিণতিতে পূর্বের ভোগান্তিতে পরেছে এলাকার মানুষ। প্রতিদিন এই খালের ওপর দিয়ে পারাপার করা শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাষাবাদকারী, অসুস্থ রোগী ও সাধারণ মানুষ পরেছে চরম বিপাকে। গত তিন বছর ধরে দেনদরবার করেও মেলেনি সমাধান। ফলে নিজেদের উদ্যোগে ড্রামের ভেলা করে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে তারা। এই খালে টেকসই ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
এলাকার কামরুল, হাসান আলী ও মজিবর রহমান জানান, নিম্নমানের কাজের ফলে ব্রিজটি দেবে গেছে। ওই এলাকার শিক্ষার্থী নুশরাত, হামিদা ও জান্নাতী জানায়, ঈদের আগের দিন ব্রিজটি ভেঙে যায়। আমরা অনেক আশা নিয়ে ব্রিজটি দিয়ে পরাপার করবো বলে ভেবেছি কিন্তু সব আনন্দ ম্লান হয়ে গেল। এখন আবার আমাদেরকে কষ্ট করে খাল পারাপার করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, বন্যার কারণে ব্রিজটি ভেঙে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুদক থেকে তদন্ত করা হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তীতে বড় ধরনের কোন প্রকল্প প্রস্তাবনা নেয়া হলে আমরা নির্দশনা অনুযায়ী সেখানে পদক্ষেপ নিবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে বাঁশের সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি আমরা খেতিয়ে দেখছি। -অনলাইন ডেস্ক