প্রতিনিধি ৩০ জুন ২০২২ , ৭:০৬:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
(দিনাজপুর২৪.কম) সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যাকারী বখাটে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতুর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট রাজিব হাসান এ রিমান্ড আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জুনিয়র দাখিল পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ আসামির অধ্যয়নরত স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী তার জন্ম ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি। সে মতে মামলার ঘটনার তারিখে আসামির বয়স ছিল ১৯ বছর ৫ মাস ৮ দিন। এমতাবস্থায় হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো আসামির সম্পৃক্ততা বা ইন্ধন আছে কি না সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ পূর্বক গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করা প্রয়োজন ।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
তার কিছু বলার আগে কি না জানতে চান আদালত। তখন জিতু আদালতকে বলেন,‘একটা মেয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়টি উৎপল স্যার জানতে পারেন। সম্পর্কের কথা তিনি আমার পরিবারকে জানিয়ে দেন। পরিবারের কাছে এ কথা বলায় আমি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এ কারণে স্যারকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করি।’
এর আগে বুধবার র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১ ও র্যাব-৪-এর যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে আশরাফুল আহসান জিতু ওরফে জিতু দাদাকে গ্রেফতার করে।
এরপর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আশরাফুল আহসান জিতু স্কুলের ছাত্র হলেও সে ওই প্রতিষ্ঠানের কলেজ পর্যায়ের একজন ছাত্রীর সঙ্গে অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা করেত। বিষয়টি শিক্ষক উৎপল সরকারের চোখে পড়ে। তিনি জিতুকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন।
খন্দকার মঈন বলেন, এতে ওই ছাত্রীর কাছে নিজের হিরোইজম দেখাতে উৎপল সরকারকে মারধর করে জিতু। এতেই ওই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর জিতু পালিয়ে যায়। সে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।
এর আগে গত বুধবার জিতুর বাবা মো. উজ্জলের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড আবেদনে জিতুর বাবাকে মামলার ঘটনার ইন্ধনদাতা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় জিতু। সে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল সরকারকে গুরুতর আহত করে সে।
পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যান। এর আগে গত রোববার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে জিতুসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।- ডেস্ক রিপোর্ট