• Top News

    হঠাৎ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে দিনাজপুর

      প্রতিনিধি ৫ জুলাই ২০২২ , ৬:৩৫:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

    -ফাইল ছবি

    মুহাম্মদ কামারুজ্জামান (দিনাজপুর২৪.কম) উত্তরের জেলা দিনাজপুর হঠাৎ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। বিদ্যুৎবিহীন দিন-রাতে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। দীর্ঘদিন বিদ্যুতের এমন সমস্যা ছিল না। হঠাৎ কেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো তার কোনো সদুত্তর মিলছে না। জেলাজুড়ে গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এই ভয়াবহ বিপর্যয়। একবার বিদ্যুৎ গেলে আসার কোন সময় থাকছে না। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ মিলছে মাত্র ১২-১৪ ঘণ্টা! বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার ব্যাপারে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ বিভাগ কোনো সঠিক কথা বলতে পারছে না। কেবল দিনাজপুর জেলা নয়, আশপাশের জেলাগুলোতেও বিদ্যুতের এমন নাকাল অবস্থা বলে খবর পাওয়া গেছে। তীব্র গরমে মানুষের কষ্ট নিদারুণ ও বর্ণনাতীত।
    দিনাজপুরসহ এ অঞ্চলের জেলাগুলোতে ৩ দিনেরও বেশি সময় থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না নর্দান ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেড। এতে অফিসে-আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। জেনারেটর, আইপিএস ও ইউপিএস কোনো কিছুই দিয়েই অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, দোকানপাট ও বাসাবাড়ি স্বাভাবিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। পচতে শুরু করেছে বাড়ির ফ্রিজের মাছ-মাংস, শাক-সবজি ও ফলমূলও। ভোর নেই, সকাল নেই, দুপুর নেই, সন্ধ্যা নেই, রাত নেই- বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে প্রতি আধাঘণ্টা পর পর। কোনো কোনো এলাকায় আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা পরপর লোডশেডিং দিচ্ছে নেসকো। দিনাজপুর বাহাদুর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আসলাম হোসেন বলেন- দিনাজপুরে এমন বিদ্যুৎ সংকট তিনি এর আগে কখনও দেখেননি। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যা বেলায় দিনাজপুর শহর যেন এক ভূতুড়ে শহরে পরিণত হয়। সামনে ঈদ-অথচ এমন সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। গত কয়েক বছরের ঈদগুলোতে করোনার প্রভাবে দোকানদারী হয়নি। এবার আবার বিদ্যুৎ সমস্যা। এদিকে, বিদ্যুৎ না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকে। অনেকে সরকারকে অনেকটা তিরস্কার করে বলছে- সব বিদ্যুৎ এখন পদ্মা সেতুতে আর কর্ণফুলি ট্যানেলে। সেখানেই গিয়ে আমাদের ঘুমিয়ে থাকতে হবে।
    নেসকো সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলায় দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১২০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৬০ মেগাওয়াট। দিনাজপুর নেসকো লিঃ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর মোট চাহিদা ২০ মেগাওয়াট আর সরবরাহ পাচ্ছে ১১ মেগাওয়াট। একইভাবে দিনাজপুর নেসকো লিঃ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর মোট চাহিদা ২২ মেগাওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ১০ মেগাওয়াট। সব মিলিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জেলায় সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেক বিদ্যুৎ বা তার থেকেও কম। ফলে দিনের অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা গেলেও অর্ধেক সময় বিদ্যুৎহীনই থাকছে দিনাজপুর। দিনাজপুর নেসকো লিঃ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ.কে.এম শাহাদত হোসেন জানান, এটি দিনাজপুরের একক সমস্যা নয়, জাতীয় সমস্যা। আমরা আপাতত জানি জ্বালানি সংকটের কারনে এই বিদ্যুৎ সংকট। ফলে জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। কবে নাগাদ এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তারও কোনো সঠিক উত্তর জানা নেই। তাই তাদেরকে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ১ ঘন্টা অন ও ১ ঘন্টা অফ রাখতে হচ্ছে। সেই হিসেবে দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টাই থাকছে লোডশেডিং। সমস্যাটা কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে প্রশ্নে- নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সেটা তারাও জানেন না। এজন্য সুনির্দিষ্টভাবে তারাও কিছু বলতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন- নেসকোর এই কর্মকর্তা।

    মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content