(দিনাজপুর২৪.কম) প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেনের ওঠার দরজায় জায়গা নেই, বিকল্প হিসেবে জানালা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করছেন। কেউবা আবার ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠেছেন। এজন্য নিচ থেকে কয়েকজন মিলে একজনকে উপরে তুলে দিচ্ছেন, পরে তার সহায়তায় অন্যরাও ছাদে উঠছেন। আবার কেউ দুই বগির মাঝের জায়গা ব্যবহার করছেন। এ দৃশ্য খোদ কমলাপুর রেল স্টেশনের।
শুক্রবার (৮ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ট্রেন প্লাটফর্মে আসার সঙ্গে-সঙ্গে শুরু হয় ধাক্কা-ধাক্কি, ঠেলাঠেলি। লক্ষ্য নিজের টিকেট অনুযায়ী আসন দখল করা। তা না করলে টিকেট থাকার পরও দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এই অবস্থা প্রায় সকল ট্রেনেই। তবে সবচেয়ে খারপ অবস্থা রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দিকে যাত্রা করা ট্রেনগুলোতে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অন্য দিকে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিজের আসন পর্যন্ত যেতে শরীরের কাপড় ভিজে যায়।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন রাশেদ রহমান। উঠেছেন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে। ট্রেনের আসনে বসার পর তাকে দেখে মনে হলো মাঝারি ধরনের বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তিনি বুঝি মাত্রই এলেন। আর শরীরের পোশাক দেখে মনে হলো হাতাহাতির এক পর্যায়ে নিজেকে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি এতোটাই হাঁপিয়ে গেছেন যে শুরুতে কথাই বলতে পারছিলেন না। বলেন, ‘ভাই দেখতেই পাচ্ছেন, দরজায় মোটামুটি যুদ্ধ করে উঠতে হয়েছে।‘
এই ট্রেনের আরেক যাত্রী নাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার টিকেট আছে, কিন্তু সিট পর্যন্ত যেতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে। যেভাবে মানুষ বাড়ি ফিরছে সেটাকে সুস্থ স্বাভাবিক বলা যায় না। একটা ট্রেনে যে সংখ্যক যাত্রী নেওয়ার কথা তার চেয়ে ৩ গুণ বেশি যাত্রী উঠে পড়েছে। আর যারা টিকেট পেয়েছে তাদের ছাদে উঠে যেতে হচ্ছে, অবস্থা এরকমই হয়ে গেছে। সিট পর্যন্ত যেতেই পারছে না।
তিনি বলেন, মোটরসাইকেল চালানোর সুযোগ থাকলে যাত্রীদের চাপ কমতো। অনেকেই বাইক নিয়ে বাড়ি যেতেন।
ভিড় হওয়ার বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষ ট্রেনে রওনা করেছেন। যার প্রভাব কিছুটা পড়েছে। এত বেশি যাত্রীর চাপ এবং মানুষের যে স্রোত, সেটা ঠেকানো যাচ্ছে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জিআরপি পুলিশ সবাই যাত্রীদের চাপের কাছে ব্যর্থ হয়েছে। ট্রেনের ছাদ থেকে যাত্রী নামানো যাচ্ছে না।’
শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলো ঠিক সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো ঠিক সময়ে ছেড়ে যেতে পারছে না। এর মধ্যে কোনোটা এক থেকে দুই ঘণ্টা দেরিতে যাচ্ছে।’ -অনলাইন ডেস্ক