প্রতিনিধি ১৬ জুলাই ২০২২ , ৫:২৬:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ (দিনাজপুর২৪.কম) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কিশোর গ্যাং এর দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বে গতকাল ১৫ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট পৌরসভা কার্যালয় এবং একটি মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি সহ পৃথক তিনটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে কিশোরদের একটি গ্যাং। ২০ থেকে ২৫ জনের এই গ্যাংটি দেশীয় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শুকওবার দিবাগত রাত ৮টায় ঘোড়াঘাট পৌরসভা কার্যালয়ের মূল গেটে ভাংচুর করে এবং পৌর মেয়রকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একই সময় গ্যাংটি পৌর এলাকার এসকে বাজারের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়ি, দক্ষিণ জয়দেবপুর গ্রামের বিএনপি নেতা ফরিদ আলমের বাড়ি এবং বড়গলি গ্রামের শ্রী তমালের বাড়িতে হামলা চালায়।
গত দু‘মাস আগে ঘোড়াঘাট কেসি পাইলট স্কুলে একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং এর সিফাত গ্রুপ এবং সোহেল গ্রুপের দ্বন্দ্ব হয়। সেই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সন্ধায় থানা সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সিফাত (১৯) সহ তার গ্রুপের সদস্যরা ঘোড়াঘাট পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউনূছ আলী মন্ডলের ছেলে ইথেন মন্ডল (২৪) এর উপর হামলা করে এবং প্রকাশ্যে তাকে বেধর মারপিট করে। সিফাত গ্যাং ভেবেছিল ইথেন মন্ডল সোহেল গ্রুপের সদস্য।
হামলাকারী গ্যাংটির নেতা সিফাত ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবির ছোট ছেলে এবং মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্করের নাতী। সিফাত গ্রুপ ইতিপূর্বেও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। অপরদিকে সোহেল গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা সোহেল রানার (২০) বাড়ি পাশ্ববর্তী পলাশবাড়ী উপজেলার পল্লীতে। সে ঘোড়াঘাট এবং পলাশবাড়ীর তরুনদেরকে নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে। এই দুই গ্রুপের অধিকাংশ সদস্যই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
এদিকে ইথেনকে মারধরের ইস্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার রাতে সিফাত গ্রুপের নেতৃত্ব থাকা সিফাতের বাড়ি এবং তার গ্রুপের অন্য সদস্য বিএনপি নেতা ফরিদ আলমের ছেলে ফারদিন ও শ্রী তমালের বাড়িতে হামলা চালায় সোহেল গ্রুপের সদস্যরা। একই সময় তারা পৌরসভায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পৌর মেয়রের।
ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন, শুক্রবার রাত ৮টার সময় কয়েকজন তরুন মিলে পৌর ভবনের মূল গেটে হামলা করে এবং গেটের ইস্পাত ভেঙ্গে ফেলে। একই সময় তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
তিনি আরো বলেন, বাহিরের লোকজনের কাছে জানতে পারলাম হামলাকারীরা ২০ থেকে ২৫ জন ছিলেন। পৌরভবনের মূলগেটের আশপাশ রাতে বেশ অন্ধকার থাকায় পৌরসভার সিসি ক্যামেরায় তাদের চেহারা বা কার্যক্রম স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। আমরা আজ শনিবার (১৬ জুলাই) পৌর পরিষদের কাউন্সিলদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এদিকে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা হামলার শিকার সবগুলো বাড়ি এবং পৌরসভা ঘুরে দেখেছি। হামলাকারী তরুন-যুবকরা কোন বাড়িতেই প্রবেশ করেনি। তারা শুধুমাত্র বাড়ি গুলো এবং পৌরসভার মূল গেটে হামলা করেছে।
তিনি আরো বলেন, হামলাকারীদের অভিভাবক এবং হামলার স্বীকার বাড়ি গুলোর সদস্যরা রাতেই থানায় এসেছিল। আমরা মামলা করার জন্য বলেছি। তবে উভয়পক্ষ বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য একদিন সময় নিয়েছে। আজ তারা চুড়ান্ত মতামত জানাবে।