(দিনাজপুর২৪.কম) নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহত হওয়া শাওনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাতে পুলিশের পাহারায় তার লাশ দাফন করা হয়। এর আগে বড় ভাই মিলন প্রধান এবং মামা মোতাহার হোসেনের কাছে শাওনের লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।
শাওনের চাচা ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ২টার দিকে নবীনগর শাহ্ওয়ার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শাওনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নবীনগর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজার সময় পুলিশ উপস্থিত ছিল।
২০ বছর বয়সী শাওন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ও বক্তাবলী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব গোপালনগর এলাকার সাহেব আলীর ছেলে। নবীনগর শাহ্ওয়ার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে শাওনদের একতলা বাড়ি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের পাহারায় অ্যাম্বুলেন্সে এলাকায় আসে শাওনের মরদেহ। আগেই জানাজা ও দাফনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা ছিলো। লাশ আসার পরপরই ‘তড়িঘড়ি’ করে শাওনের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা সকাল দশটায় নগরীর ডিআইটিতে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তুতি নেয়। এতে পুলিশ বাধা দিলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে এই সংঘর্ষ। এই সময় গুলিবিদ্ধ হয় শাওন।
এদিকে রাতে শাওনকে যুবদল নয় যুবলীগ কর্মী দাবি করে তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তারা সেখানে অবস্থান নেন। বিপরীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, ‘শাওন আমাদের এলাকার ছেলে এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর ভাতিজা। তারা চার ভাইয়ের মধ্যে বড়জন অনেক আগেই মারা গেছে। আর তিন ভাই তাদের চাচা শওকত আলীর সঙ্গেই থাকেন এবং শাওন যুবলীগের রাজনীতি করেন। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
তবে নিহত শাওনের মা ফরিদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী সাহেব আলী মারা যাওয়ার পর বড় ছেলেটাও অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এরপর তিন ছেলে কাজ করে সংসার চালায়। শাওন কোনো রাজনীতি করতো না। বাড়ির কাছে শহিদুল্লাহর ওয়ার্কশপে কাজ করতো। সকালে কাজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় সে।’ -ডেস্ক রিপোর্ট