বুধবার , ২৭ মার্চ ২০২৪ | ২রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

টিকেট কালোবাজারি : ধরাছোঁয়ার বাইরে রেল কর্মকর্তারা

প্রতিবেদক
admin
মার্চ ২৭, ২০২৪ ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) বারবার পদক্ষেপ নিয়েও রেলওয়ের টিকেটের কালোবাজারি বন্ধ করা যাচ্ছে না। টিকেট বিক্রির পদ্ধতি যত আধুনিক হচ্ছে, অপকর্মের ধরনও তত পাল্টে যাচ্ছে। এর সঙ্গে রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকায় অগ্রিম টিকেট ছাড়ার দিন থেকেই টিকেট কালোবাজারি হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার কালোবাজারি চক্রের মূল হোতা সহজডটকমের সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাস ও পিয়ন মিজান ঢালীসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হলেও তাদের সঙ্গে জড়িত রেলওয়ের কর্মকর্তারা রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।  রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কেউ টিকেট দিতে না পারলে নিউটন ঠিকই টিকেট ম্যানেজ করে দিতেন। বুকিং সহকারীদের ছত্রছায়ায় কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা প্রায় ৭৫ শতাংশ টিকেট কেটে নিয়ে পরে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করত। এ চক্রের সঙ্গে শুধু টিকেট বুকিং সহকারী নন, বুকিং মাস্টার থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাস্টার ও ম্যানেজাররাও জড়িত। এভাবে চক্রটি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও দীর্ঘ দিন ধরেই রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। রেলে নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক যাত্রী জানান, ৫০০ টাকার টিকেট ৯০০ বা ১ হাজার টাকা দিলেও টিকেট পাওয়া যায়। প্রতিটি স্টেশনে শক্তিশালী টিকেট কালোবাজারি চক্র রয়েছে। পূর্বাঞ্চলের প্রতি স্টেশনে কাউন্টার থেকে টিকেট না পাওয়া গেলেও স্টেশন চত্বর থেকে অতিরিক্ত টাকায় টিকেট পাওয়া যায়। নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা বেশি দামে টিকেট কাটে।
গ্রেফতার হওয়া নিউটন বিশ্বাস ট্রেনের টিকেট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সিএনএসবিডির যাত্রা শুরুর পর ২০১২ সাল থেকে সার্ভার অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। সিএনএস এ চাকরি করার সময় থেকেই তিনি কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালে সহজডটকম টিকেট বিক্রির দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন প্রতিষ্ঠানেরও সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান। গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ায় তিনি ছিলেন চক্রের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষমতাধর। সফটওয়্যারের দায়িত্বে থাকার কারণে সব ছিল তার নখদর্পণে। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও যেকোনো টিকেটের জন্য নিউটনকে ফোন দিতেন।  রেলওয়ে বাণিজ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, বিভিন্ন সময় টিকেট কালোবাজারিদের নামের তালিকা হলেও চক্রের সঙ্গে জড়িত রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম কখনোই তালিকাভুক্ত করা হয়নি। অথচ তাদের অনেকে সরাসরি টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। ফলে অবৈধ টিকেট উদ্ধারসহ চক্রের সদস্যদের বারবার আটক করার পরও কালোবাজারি রোধ করা যাচ্ছে না। তা ছাড়া এই চক্রকে অসাধু কর্মকর্তারা প্রশ্রয় দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে কালোবাজারি ঠেকাতে পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকেট কাটার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কালোবাজারি ঠেকানো যাচ্ছে না।
রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, রেলের টিকেট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সহজডটকমের বিরুদ্ধে একই টিকেট একাধিক যাত্রীর কাছে বিক্রি করা, টিকেট ফেরত দেওয়ার পরও টাকা ফেরত না দেওয়াসহ নানান অভিযোগ থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না। অভিযোগ রয়েছে রেলওয়ের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্ক রয়েছে এবং ওই কর্মকর্তাকে মিরপুরে একটি ফ্ল্যাট উপহারও দিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে ওই কর্মকর্তা তড়িঘড়ি করে এসআর ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কোনো টেন্ডার ছাড়াই ৮টি ট্রেন পরিচালনার জন্য পুনরায় লিজ দিয়েছেন। বর্তমানে ৩৮টি ট্রেন লিজ নিয়ে পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। অতিরিক্ত মহাপরিচালকের সঙ্গে সহজডটকমসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় তারা নিয়ম লঙ্ঘন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।  এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি রেলের টিকেট কালোবাজারির অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করেছিল র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ২২৪টি ট্রেনের টিকেট জব্দ করা হয়েছিল। তারা প্রতিদিন কালোবাজারির মাধ্যমে ৫ শতাধিক টিকেট সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রি করত। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা রেলস্টেশনে কর্মরত কর্মচারী, সহজডটকমের কর্মকর্তা এবং সার্ভার রুম ও আইটি শাখার কর্মীদের সহযোগিতায় ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করত।
রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে একটি সিন্ডিকেট জড়িত। যাদের সঙ্গে সহজডটকম এবং রেলের লোকজনও জড়িত। ইতিমধ্যে দুটি সিন্ডিকেটকে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর সঙ্গে রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঠিকমতো টিকেটিং ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য সহজডটকমকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিকেট কালোবাজারি বন্ধে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। -নিউজ ডেস্ক

সর্বশেষ - ক্যাম্পাস

আপনার জন্য নির্বাচিত