মঙ্গলবার , ৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. আইন আদালত
  3. আর্ন্তজাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও কৃষাণ
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রিকেট
  8. গল্প-সাহিত্য
  9. চাকুরি
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টালিউড
  13. টেনিস
  14. তথ্য-প্রযুক্তি
  15. ধর্ম ও ইসলাম

উত্তরের পথে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল, এবারও গাড়ির জট

প্রতিবেদক
admin
এপ্রিল ৯, ২০২৪ ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে সড়কে। বিশেষ করে উত্তরের পথে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে ছিল ঘরে ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অনেকেই আগাম টিকিট পাননি। ফলে প্রতিটি বাসে নির্দিষ্ট সিট ছাড়াও ইঞ্জিন কাভার ও চালকের পাশে বসে নাড়ীর টানে বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন যাত্রীরা। যত কষ্টই হোক না কেন ঘরে পৌঁছতেই হবে এমন চেষ্টা যাত্রীদের চোখে মুখে। এর ফাঁকে টিকিটের বাড়তি দামও গুনতে হয়েছে তাদের।  সোমবার (০৮ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আজ চাঁদ দেখা গেলে আর এক দিন পরই অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল ফিতর। সোমবার ছুটি হয়েছে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। ফলে রাত ১০টার পর থেকে উত্তরের পথে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামে। রাত যতই বেড়েছে বাস টার্মিনালগুলোতে বাসের সংখ্যা কমেছে। সেগুলো এখন উত্তরের পথে। তবে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে অনেকে সাত ঘণ্টাতেও চন্দ্রা পৌঁছাতে পারেননি বলে জানা গেছে।

যারা আগাম রওনা হয়েছেন ভোরে হয়ত কেউ কেউ গন্তব্যে নেমে পড়বেন। অধীর হয়ে থাকা প্রিয়জনের মুখটি দেখে উবে যাবে রাতভর পথের কষ্ট আর ক্লান্তি। তবে রাত ৯টার পর যারা বের হয়েছে উত্তরা হয়ে তারাই পড়েছেন ভোগান্তিতে।

8

-ছবি সংগ্রহীত

রাত দশটার দিকে গাবতলী টার্মিনালের পূর্বপ্রান্তে একটি বাস কাউন্টারের সামনে কথা হচ্ছিল গার্মেন্টস কর্মী নজরুলের সাথে। নজরুল বলছিলেন, টিকিট এখনো পাইনি তবে ইঞ্জিন কাভারে বসে যাবে। একটু কষ্ট হবে। হোক না তাতে কি! সকালে বাড়ি পৌঁছালে সব কষ্ট ভুলে যাব।

এক বছর পর বাড়ি যাচ্ছেন পঞ্চগড়ের জয়নুল। জয়নুল বলছিলেন, নানা কারণে এক বছর ধরে বাড়ি যাইনি। ছেলে-মেয়ে বউ বাচ্চাকে শুধু মোবাইলে আর ভিডিওতে দেখেছি। গন্তব্যে পৌঁছে তাদের মুখগুলো দেখব। এই যে খুশি এটা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না।

তাদের সাথে যখন কথা হচ্ছিল গাবতলী বাস টার্মিনালের ভেতরে বাহিরে উত্তর ছাড়াও যশোর খুলনা সাতক্ষীরা কুষ্টিয়া রুটের যাত্রীতে ভরে গেছে। প্রতিটি বাস কাউন্টারে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড়। গণ ছুটি হওয়ায় টিকিটের চাহিদাও ছিল ব্যাপক। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টিকিটের চড়া দাম নিচ্ছে কাউন্টারগুলো। এরপরও দমানো যায়নি যাত্রীদের। যাত্রীদের কথা ছিল একটাই, যে করে হোক গ্রামে যেতেই হবে। এজন্য বেশির ভাগ যাত্রী বাড়তি দামকে তেমন পাত্তা দেননি। তবে অনেকে আবার দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। তারা বাসের বিকল্প যানবাহনে চেপে ছুটেছেন বাড়ির পথে।

গাবতলীতে টানা তিন ঘণ্টা অবস্থান করে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রীদের চাপ বেশি। এই সুযোগে ঢাকার লোকাল বাসগুলোও দূরপাল্লার যাত্রী টানছে। কেউ বগুড়া, কেউ সিরাজগঞ্জ আবার কেউ ভুয়াপুর টাঙ্গাইল পর্যন্ত যাত্রী পেতে হাঁকডাক করছেন। তবে তাতেও ছিল বাড়তি ভাড়ার ফাঁদ। এতেও কেউ জিতছেন কেউ হেরেও রওনা হয়েছেন নাড়ীর টানে।

এবার টার্মিনালে যাত্রীদের সাথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদস্যরা সতর্ক থাকায় বাসের সংশ্লিষ্টরা যাত্রীদের সাথে তেমন বসচায় জড়াননি। পুলিশের মাইক থেকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছিলো কেউ যেন বাসে কারো দেওয়া কোনো খাবার না খায়।

6

-ছবি সংগ্রহীত

তবে এবার যাত্রীরা বাসের সিডিউল নিয়ে বিপাকে পড়েননি। যথাসময়ে টার্মিনাল থেকে প্রতিটি বাস ছেড়ে গেছে। ফলে যাত্রীদের গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়নি। অন্য বছরগুলোতে কাউন্টারে বাসের জন্য বসে থেকে অনেকে সেখানেই সেহরি খেয়ে বাসে উঠেছেন।

পথে গাড়ির গতি ধীর, ভোগান্তি যাত্রীদের

এবার সিডিউল বিপর্যয়ের খবর না পাওয়া গেলেও সড়কে গাড়ির জটের খবর মিলেছে। বগুড়ার শাহরিয়ার হোসেন রাত সাড়ে নয়টায় নিজের প্রাইভেট কারযোগে রওনা হয়েছিলেন। ভোর সাড়ে চারটায় তিনি গাজীপুরের চন্দ্রাতেও পৌঁছাতে পারেননি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সড়কের কাজ চলছে ফলে গাড়ির গতি ধীর। এতো সময় লাগলে সকালে বাড়ি পৌঁছাতে পারব কিনা সন্দেহ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার যমুনা সেতু পর্যন্ত যেতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে যাত্রীদের। তবে এমনটি হয়নি যারা সন্ধ্যার আগে ঢাকা থেকে উত্তরের পথে রওনা হয়েছেন। রাত যতো বেড়েছে ততো ভোগান্তির দানব চেপে বসেছে সড়কে।

রাত সাড়ে চারটায় খবর নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুরের চন্দ্রা মহাসড়কে তীব্র যানজট। থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এক সাথে ঢাকা থেকে হাজার হাজার গাড়ি বের হওয়ায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

7

-ছবি সংগ্রহীত

অন্যদিকে পদ্মা সেতু চালুর পর সদরঘাটের যাত্রীরা এখন বাসে যাতায়াত করতে শুরু করেছে। সেতু চালুর পর থেকে ফেরী পারাপারের ভোগান্তি কমেছে।

সাতক্ষীরার রুবেল ও সোহানা দম্পতি। শ্যামলীর একটি কাউন্টারে বাসের টিকিট খুঁজছিলেন। তাদের সাথে এসময় কথা হয়। রুবেল বলেন, যেভাবে হোক বাড়ি যেতেই হবে।

শেষ মুহূর্তে গাবতলী থেকে যাত্রীর খরা কেটে গেছে। এইতো দুই দিন আগেও যাত্রীর জন্য হাঁকডাক ছিল। কিন্তু সোমবার এই টার্মিনালে যাত্রীর ঢল নামে।

অধিকাংশ বাসে নির্দিষ্ট সিটের পাশাপাশি বাড়তি যাত্রী নিতে ভেতরে বেঞ্চ বসানো হয়েছিল। অনেকে ছাদেও চেপে বসেছিলেন। তবে এসব বিষয় কড়া নজরদারী করেছে পুলিশ সদস্যরা। তারা বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে বারবার যাত্রীদের মাইকে সচেতন করছিলেন। তবে সেদিক কারো যেন নজরই ছিল না।

তবে ঈদের দুইদিন আগে যাত্রীর চাপে বেজায় খুশি ছিল বাসের হেলপার, চালক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টরা। তার প্রমাণও মিললো হানিফ পরিবহনের কাউন্টারম্যান রাজার কথায়। তিনি বলেন, সন্ধ্যা থেকে টিকিট বিক্রি করতে করতে ক্লান্ত। বাধ্য হয়ে আমরা গাড়ির সংখ্যা বাড়ালাম। তারপরও যাত্রীর চাপ কমছে না।

5

-ছবি সংগ্রহীত

শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কর্মী শহীদুল বলেন, গেল শুক্রবার থেকে কোনো যাত্রী পাইনি। আজ আমরা খুব খুশি। ক্ষতি কিছুটা পোষায় নিতে পারব।

গাবতলী বাস টার্মিনালের বাইরে ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুর, পল্লবী, দারুসসালাম, আদাবর, সাভার ও আশুলিয়া এলাকা থেকে শত শত রিজার্ভ বাস ভাড়া করে উত্তরের পথে লোকজন ছুটেছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। এসব বাস আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন যাত্রীরা।

গাবতলী বাস টার্মিনালের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র সোমবার রাতে উত্তরের পথে গাবতলী থেকে হাজারেরও বেশি বাস বিভিন্ন রুটে রওনা হয়েছে। আর এ টার্মিনাল থেকে ঢাকা ছেড়েছে অর্ধ লাখ মানুষ। এছাড়াও বাকীরা লোকাল বাস, মাইক্রো বাস, পিকআপ ও কেউ কেউ পণ্যবাহী ট্রাকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। -নিউজ ডেস্ক

সর্বশেষ - রাজনীতি