স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) দেশের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা দিনাজপুর। ধান, লিচু, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয় জেলার উর্বর মাটিতে। তবে এবার ধান থেকে নয়, বাঁশের ফুল থেকে উৎপাদন হচ্ছে চাল। আর সেই চাল দিয়ে ভাত রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গ্রামের তরুণ সাঞ্জু রায়।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ১ নম্বর এলুয়াড়ী ইউনিয়নের পাকাপান এলাকার সীমল রায়ের ছেলে সাঞ্জু রায় বাঁশের ফুল থেকে চাল তৈরি করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন।
ধান থেকে উৎপাদিত চালের মতো হুবহু এই বাঁশ ফুলের চাল। ভাত, পোলাও, আটা কিংবা পায়েস সব কিছু তৈরি হচ্ছে বাঁশ ফুলের চাল থেকে। তুলনামূলক কম উৎপাদন আর চাহিদা বেশি থাকায় গ্রাহকদের চাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সাঞ্জু রায়।
বাঁশগাছে পাওয়া দানাদার শস্যের চাল নিয়ে গেছেন পাড়ার লিপি রানী নামে এক গৃহবধূ।
তিনি দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমি ধানের চাল বদল দিয়ে ১ কেজি বাঁশগাছের চাল নিয়ে গেছি। রান্না করে খেয়েছি। খুবই সুস্বাদু লাগছে আমাদের।
বাঁশগাছের চাল দেখতে আসা ইব্রাহিম দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চালগুলো দেখলাম। হুবহু ধানের চালের মতো। আর পাশের একবাড়িতে পায়েস পাক করেছে। উনি আমাকে পায়েস খাওয়ালেন। পায়েসটাও অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
বিরামপুর থেকে বাঁশ গাছের চাল দেখতে আসা তরুণ রায় দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাঁশগাছের ফুল থেকে চাল উৎপাদন হচ্ছে। এটা আমার জন্মের পর থেকেও দেখি নাই। আজ আমি এটা প্রথম দেখলাম।
সাঞ্জু রায়ের প্রতিবেশী বিমল রায় দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাপ-দাদার মুখে গল্প শুনেছি যে বাঁশগাছের ফুলে চাল হয়। কিন্তু আমি আজকে প্রথম দেখলাম যে এটা সত্যিই হয়। এই চাল যেদিন সাঞ্জু ভাই কুটে নিয়ে আসে সেদিন আমি এক কেজি চাল কিনে নিয়ে আসি। সেই চাল দিয়ে আমি খিচুড়ি রান্না করে খেয়েছি। খিচুড়িটাও অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
এ বিষয়ে সাঞ্জু রায় দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমি কালী চন্দ্র রায় (৭০) নামে একজন পরিচিত আমাকে বাঁশের বীজ থেকে দানা সংগ্রহ করে খাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানান। তার কথামতো আমি সেগুলো সংগ্রহ করে প্রথমে নিজে খাই, ভালো লাগায় এর পর থেকে তা সংগ্রহ করে যাচ্ছি। এতে নিজেদের খাবারের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি এই চাল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছি। এ পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ ২০ কেজি সংগ্রহ করেছি। এখনও পাঁচ বস্তা মজুত আছে। ভালোই লাগছে।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এটি গবেষণার বিষয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোনো কৃষিপণ্য সার্টিফাই করলে তখন আমরা সে বিষয়ে সম্প্রসারণের কাজ করি এবং প্রচারণ-প্রচারণা করি।