(দিনাজপুর টোয়েন্টিফোর ডটকম) রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু কেনা শেষ অনেকেরই। এবার সবাই মসলা কিনতে ব্যস্ত। কিন্তু প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির উর্দ্ধ দামে নাজেহাল অবস্থা ক্রেতাদের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত বছরে ঈদের সময়ের তুলনায় এবার প্রায় সব ধরনের মসলার দাম ঊর্ধ্বমুখী। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে এসব মসলার। দেশি পেঁয়াজ দামের দিক থেকে শতক ছুঁইছুঁই। সঙ্গে আদা-রসুনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারও গরম।
ক্রেতারা বলছেন, প্রকারভেদে বিভিন্ন মসলার দাম গত কোরবানির ঈদের চেয়ে এবার ৫ থেকে ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। গত বছরের তুলনায় মসলাটির দর দ্বিগুণের কাছাকাছি। মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। গত বছর এর দাম ছিল ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা।
প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়। গত বছর কোরবানির ঈদের আগে জিরা কেনা গেছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। প্রতি কেজি লবঙ্গের দাম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা। যা গত বছর ছিল দেড় হাজার টাকার মতো।
গত বছর দারুচিনি ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। এ বছর কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬২০ টাকা। প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে তেজপাতার দাম। প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। যা গত বছর একই সময়ে দর ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
এছাড়া হলুদের গুঁড়া ৫০০-৬০০ টাকা, কালোজিরা ৩৫০-৪০০ টাকা, আদা ২৪০-২৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০-১৬০ টাকা ও পেঁয়াজ ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মসলার ক্রেতারা জানান, কোরবানিতে মসলার চাহিদা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি থাকে। সেই চাহিদা পুঁজি করে প্রতিটি বাজারে ব্যবসায়ীরা মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।
এদিকে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বলছেন, মহাজনরা মসলার দাম বৃদ্ধি করায় আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। তাই এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম।
তবে দাম বাড়লেও গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশিরভাগ মসলার দাম কম বলে দাবি করেন বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, বেশিরভাগ এলাচ আসে ভারত থেকে। সেখানে এবার গরমের কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। তাছাড়া ডলারের দাম বেশি। এসব কারণে দাম বেড়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা ২০, ৫০, ১০০ টাকা করে মসলা বিক্রি করেন, সে জন্য তারা দর কিছুটা বেশি নিচ্ছেন।
ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, মসলার দাম বাড়ার তথ্য মিলেছে। দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, ডলার সমস্যা ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধিতে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। -নিউজ ডেস্ক